যশোরের চৌগাছার বেড়গোবিন্দপুর বাওড় নিয়ে সংঘর্ষ আহত অতঃপর মামলার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে প্রেসক্লাব চৌগাছা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চৌগাছা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে চৌগাছার বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ে এক ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি হয়। এক শ্রেনীর মানুষ বাওড়ে ব্যাপক লুটতরাজ চালাতে থাকে। এই বাওড়ের সিংহভাগ হচ্ছে চৌগাছা সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত। সে কারনে বাওড় কর্তৃপক্ষ তথা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, বাওড়ের সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক হাসান ও অংশিদাররা স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে বারবার সরানোপন্ন হয়। একপর্যায়ে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের পরামর্শে সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ও পৌর যুবদলের আহবায়ক সালাউদ্দিনকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বাওড়টি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য বলেন। উল্লেখিত ব্যক্তিরা বাওড় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ২০ শতাংশ পারিশ্রমিক হিসেবে অর্থ প্রদানের ভিত্তিতে একটি লিখিত চুক্তিনামা করেন এবং আগামী চার বছর এরা বাওড় দেখাশুনা করবেন বলে সম্মতি হয়। এরপর বাওড়ে স্বস্তি ফিরে আসে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমাদের সাথে চুক্তির পর একটি কুচক্রি মহল বাওড় নিয়ে নতুন ভাবে চক্রান্ত শুরু করে। যার নেতৃত্ব দেন যশোর সদরের চুড়ামনিকাটি এলাকার কালাম নামের এক ব্যক্তি। সে বিভিন্ন সময়ে বাওড়ে এসে বাওড় তার বলে দাবি করতে থাকে। একপর্যায়ে সে একটি কাগজ নিয়ে এসে বলেন, বাওড় আমি ২ কোটি টাকা দিয়ে নিয়েছি। ৫০ শতাংশ আমি পরিশোধ করেছি আর ৫০ শতাংশ শেয়ার আমাদের নিতে বলে। তার এই কাগজ ছিলো অবৈধ। যে কারনে আমরা তাকে বাওড় থেকে বিতাড়িত করি। সে চক্রান্ত থেকে বিন্দু মাত্র সরে যাইনি। ঝিনাইদাহ জেলার বারবাজরের জৈনক এক আলেমকে নিয়েও সে ষড়যন্ত্র করে কিন্তু বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় সেবারও টিকে থাকতে পারেনি। হঠাৎ করে গত কয়েক দিন পূর্বে কালাম জানায় বাওড় আমার আমি দখল নিবো এবং মাছ শিকার করবো, তোমাদের শক্তি থাকলে আমাকে প্রতিহত করো। সেই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ২৪ জানুয়ারী কালাম অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাওড়ে হাজির হয়। খবর পেয়ে গ্রামের কিছু ব্যক্তি সেখানে গেলে সন্ত্রাসীরা দেশি বিদেশী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে বিএনপির কর্মী হুদা চৌগাছার মোবারক হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম ও রবিউল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসি একত্রিত হয়ে সেখানে হাজির হলে বিশ্বাসপাড়ার মৃত সহিদুল ইসরামে ছেলে উজ্জল পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়ে। এ সময় ইটের আঘাতে সে মাটিতে পড়ে গেলে লোকজন তার পিস্তলটি দুরে ছুড়ে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ পরিত্যাক্ত অবস্থায় ওই পিস্তাল উদ্ধার করেন। জনতার ধাওয়া খেয়ে কালাম বাহিনী এ সময় বাওড় ছেড়ে পালিয়ে যায়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপে যে বাওড়ে স্বস্তি ফিরেছে, সেই বাওড় নিয়ে আবার বিএনপির একটি অংশ চক্রান্ত শুরু করেছে। উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির এক শীর্ষ নেতার প্রকাশ্য ইন্ধোনে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার কারনেই ভিন্ন উপজেলার সন্ত্রাসীরা এসে আমাদের উপর হামলা করে আবার ওই নেতার ইশারায় তারা মামলাও করেছে। বিষয়টি সুষ্ঠ ভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষিদের আইনের আওতায় আনতে তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুর রহমান, পৌর যুবদলের আহবায়ক সালাউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক সুজ্জল হোসেন, বিএনপি নেতা জালাল উদ্দিন, নুর হোসেন, হাসান আলী, ইউনুচ আলী, আঃ রব, সাইফুল ইসলাম, আঃ রহিম, শিমুল হোসেন, কবির উদ্দিন, কামরুল ইসলাম, শাহিনুর ঢালি, গোলাম রসুল, সেলিম রেজা, কামাল আহমেদ, তোহির উদ্দিনসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।