খুলনায় শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের: উত্তেজনা বিরাজমান
তারিকুল ইসলাম আলভি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৫ জন নেতার বিরুদ্ধে খুলনায় প্রথমবারের মতো একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার, খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালউদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল, এবং কেসিসির সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এছাড়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. ডি. বাবুল রানা, ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারীর নামও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী অভিযোগ করেন যে, ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে ফুলতলা থেকে রওনা দেওয়া প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মীর উপর আওয়ামী লীগ সমর্থিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই হামলা সংঘটিত হয় বলে অভিযোগ। হামলায় শটগান, কাটা রাইফেল, বন্দুক, চাপাতি, ও বোমাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে বহু নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায়ও পুনরায় হামলার শিকার হন।
এছাড়াও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী শেখ রাফসান জানীকে জীবননাশের হুমকি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
একইদিনে, দিঘলিয়া থানায় সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মূর্শেদীসহ ৮৪ জনের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. খাইরুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট দিঘলিয়ার পুটিমারী বটতলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
খুলনায় এই ধারাবাহিক সহিংসতা ও মামলা-মোকদ্দমার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।