স্টাফ রিপোর্টার
কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে পানি জমেছে চৌগাছার বাকপাড়া বিলে। এ কারণে বিলে রোপণ করা প্রায় চারশ বিঘা রোপা আমন ধান পচে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিল হতে পানি বের হওয়ার একমাত্র কালভার্ট একটি মহল বন্ধ করে দেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
চৌগাছা পৌর ভবনের পেছনের বিলটি বাকপাড়া বিল হিসেবে পরিচিত। ইরি ও রোপা আমনের জন্যে বরাবরই খ্যাতি রয়েছে বাকপাড়া বিলের। ২০০৪ সালে পৌরসভা গঠনের পর ব্যাপক উন্নয়ন হতে থাকে পৌর এলাকাতে। নিরাপদ বাসযোগ্য উপজেলা হওয়ার সুবাদে গ্রামাঞ্চল এমনকি বিভিন্ন উপজেলা হতে মানুষ এখানে জমি কিনে ব্যবসা -বাণিজ্য করার পাশাপাশি বসতবাড়ি নির্মাণ করতে থাকেন। বর্তমান যে বিলে পানি জমেছে তার চারপাশে তৈরি হয়েছে অনেক বহুতল ভবন। চৌগাছা- যশোর সড়কে হাসপাতাল সংলগ্ন একটি কালভার্ট ছিল। এই কালভার্ট দিয়ে বিলের পানি বের হয়ে পাশে রাইসার বিলে পড়ত। উন্নয়নের জাতাকলে পিষ্ট হয়ে বন্ধ হয়েছে এ খাল। একই সাথে কালভার্টও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতে বাকপাড়া বিলে জমে পানি। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে বিলে তলিয়ে গেছে রোপা আমন । চাষিরা পানি বের করার চেষ্টা করেও সফল হননি।
কৃষক হানেফ আলী বলেন, বাকপাড়া বিলে তার ৫ বিঘা রোপা আমন ধানক্ষেত রয়েছে। বৃষ্টির কারণে সমুদয় ধান এখন পানির নিচে। অনুরুপভাবে কৃষক নুরনবির ওই বিলে ১ বিঘা, হায়দার আলীর ১ বিঘা, হারান মিয়ার ২ বিঘা, হাফিজুর রহমানের ১ বিঘা, কুতুব উদ্দিনের ২ বিঘা, সাইবি বেগমের ২ বিঘা, আমজাদ হোসেনের ২ বিঘা, সেলিম রেজার ২ বিঘাসহ অন্তত অর্ধশত কৃষকের শ শ বিঘা ধান এখন পানির নিচে। ভুক্তভোগী চাষিরা বলেন, এমন এক সময় ছিল সামান্য বৃষ্টি হলেই তা কালভার্ট দিয়ে পানি বেরিয়ে পাশের বিলে গিয়ে পড়ত। তাই ইরি ও আমন ধান চাষে কখনও কৃষককে সমস্যায় পড়তে হয়নি। সময়ের সাথে অনেক কিছু পাল্টে গেছে। বিলের জমি বিক্রি হয়েছে। তৈরি হয়েছে আবাসিক ভবন ছাড়াও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পানি বের হওয়ার খালটি ভরাট হয়েছে এবং কালভার্ট হয়েছে বন্ধ। ফলে এখন বৃষ্টি আর্শিবাদ না হয়ে এই বিলের কৃষকের জন্যে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৌসুম শুরুতে আমন ধান রোপণ করা হয়। এরই মধ্যে বৃষ্টিতে সব ধানের চারা এখন পানির নিচে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, খবর পেয়ে আমরা সরেজমিনে ওই বিল পরিদর্শন করেছি। আগে যে স্থান দিয়ে পানি বের হতো তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বিকল্পভাবে পানি বের করার বিষয়টি সকলকে ভাবতে হবে। আর বৃষ্টি না হলে অনেক ধান বেঁচে যাবে।