নিজস্ব প্রতিবেদক : পিরোজপুরের জেলা পরিষদের বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা তুললেও এখনো কাজ শুরু করেননি তিনি।
জানা গেছে, উপজেলার দৈহারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছৈলাবুনিয়া গ্রামে ছৈলাবুনিয়া রামস্মরণ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে ২০২১-২২ অর্থবছরে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় পিরোজপুর জেলা পরিষদ। প্রাথমিক পর্যায়ে কাজের জন্য বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন ইউপি সদস্য রাজিব শিকদার। তিনি টাকা উত্তোলন করে নানা অজুহাতে দুই বছরেও ওই টাকা ব্যবহার করেননি বিদ্যালয়ের কোনো কাজে।
স্থানীয়দের দাবি, স্কুল কমিটির কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রকল্পের টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন ইউপি সদস্য রাজিব শিকদার। একাধিকবার কাজের প্রতিশ্রুতি দিলেও উন্নয়নের বরাদ্দকৃত টাকা তিনি নিজের পকেটে রেখে দিয়েছেন। সরকারি বরাদ্দের টাকা স্কুল কমিটির কাছে বুঝিয়ে না দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পকেটে রাখার কোনো এখতিয়ার নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
ছৈলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক সচিব শ্যামাপ্রসাদ বেপারী বলেন, ইউপি সদস্য রাজিব শিকদার আমাদের মসজিদ উন্নয়ন ও নির্মাণ প্রকল্পের কথা বলে ৫০ হাজার টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। ওই টাকা বরাদ্দের সময় আমি সুপারিশ করে দিয়েছিলাম। এখনো যে ওই টাকার কাজ করেনি এটা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রাজিব শিকদার বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ১ লাখ টাকার ৫০ হাজার টাকা উঠিয়েছি। নিজের অলসতার জন্য স্কুলের কাজ ধরতে বিলম্ব হচ্ছে। এই অল্প টাকায় স্কুলের কোনো কাজ করা যায় না, বিধায় অন্য একটি প্রজেক্টের লক্ষাধিক টাকা সংযুক্ত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন কোনো বরাদ্দ এলে উত্তোলনকৃত টাকা সংযুক্ত করে স্কুল নির্মাণের কাজ করব।
ছৈলাবুনিয়া রামস্মরণ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পঙ্কজ মিস্ত্রি বলেন, বছর দুয়েক আগে রাজিব মেম্বার আমাকে জানিয়েছিলেন ৫০ হাজার টাকা স্কুল সংস্কারের জন্য উত্তোলন করেছে। স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে কোনো বিষয়ে জবাবদিহি করার লোক নেই। সরকারি বরাদ্দের টাকা ব্যক্তিগতভাবে দীর্ঘদিন পকেটে না রেখে স্কুলের অবকাঠামোগত সমস্যায় ব্যয় করা উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৈহারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহারুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাতের কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে অপরাধ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া খান স্বপন বলেন, বিদ্যালয়ের নামে সরকারি প্রকল্পের টাকা কাউকে না জানিয়ে উত্তোলন করা অন্যায়। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান জানান, জেলা পরিষদের বরাদ্দের টাকা আমাদের ইউএনও অফিসের মাধ্যমে আসে না। টাকাটা তারা সরাসরি বরাদ্দ করে। তারপরও আমি যদি কোনো লিখিত অভিযোগ পাই বিষয়টি দেখব।