নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের চরাঞ্চলের যে দিকে চোখ যায়, শুধু পানি আর পানি চোখে পড়ে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পানি বন্দি হয়ে আছে উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল গাবসারা, অর্জুনা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ। বন্যার পানিতে ভাসছে এসব মানুষের ঘর-বাড়ি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের।
সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানি বৃদ্ধির ফলে পুরো চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ভেঙে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অসংখ্য বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে এবং অনেকের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। পোকা-মাকড়ের আতঙ্কে নিঘুম রাত কাটছে বানভাসি মানুষের।
ইতোমধ্যে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের কালিপুর, রুলীপাড়া, চন্ডিপুর, জয়পুর, পুংলীপাড়া, রেহাইগাবসারা ও ফজলের হাট এলাকার পুরো চরাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরেও ঢুকে পড়েছে পানি। চরাঞ্চলের কেউ নৌকায় কেউ স্বজনদের বাড়ি কেউবা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
গাবসারার কালিপুর গ্রামের সবুর আলী জানান- ‘৩-৪ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। ১২ জনের পরিবার, শিশু সন্তান ও বৃদ্ধদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছি। চরে সব জায়গায় পানি আর পানি। এছাড়া কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। ঘরে খাবারও নেই, দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছি।’
একই গ্রামের আছর উদ্দিন, শফিকুল ইসলামসহ অনেকে বলেন- বাড়িতে পানি, যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। নৌকাতেই থাকতে হচ্ছে। পানিতে পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেড়ে গেছে। সকলের মাঝে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের অভিযোগ, কয়েকদিন ধরে পানিবন্দি থাকলেও এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পাননি তারা।
এদিকে, রবিবার বিকালে উপজেলার অর্জুনা পরিষদ মাঠে বন্যা কবলিত অসহায়দের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা সামগ্রী বিতরণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসন। এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ছোট মনির ও জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বন্যার্তদের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া পানিবন্দিদের তালিকা তৈরির কাজও শেষে হয়েছে। অতিদ্রুত তাদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে।