চৌগাছার পুড়াপাড়া বাজারের সেই সড়ক অদৃশ্য কারনে মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসির। বছরের পর বছর সড়কেটি ভেঙ্গে তৈরী হয়েছে পুকুর, অল্প বৃষ্টিতেই জমছে হাটু পানি। অসহনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে প্রতিনিয়ত চলাচল করছেন পথচারীসহ যানবাহন, ঘটছে দুর্ঘটনা। তাই অবিলম্বে সড়কটি মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছেন পথচারীসহ ভুক্তভোগী এলাকাবাসি।
উপজেলার পুড়াপাড়া বাজার এ অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের কাছেই অত্যান্ত পরিচিত একটি বাজার। চৌগাছা সদর হতে পশ্চিমে বাজারের অবস্থান যার দুরত্ব মাত্র ১০ কিলোমিটার। নানা কারনে এই বাজারটি চৌগাছাতো বটেই চৌগাছার বাইরেও রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। চাল তৈরীর রাজধানী বলে খ্যাত পুড়াপাড়া বাজার। এ ছাড়া সময়ের ব্যবধানে এখানে গড়ে উঠেছে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন, বাজারটিতে আছে সহস্রাধীক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ৫২টি চাল তৈরীর চাতাল, ১টি অটো রাইসমিল, চাল বাছাই করা মিল আছে ১টি, বড় পশুহাটের অবস্থান এখানে, পুড়াপাড়া বাজার পার হলেই আন্দুলিয়া বিওপি ক্যাম্প। এতো কিছু থাকা সত্বেও এই বাজারের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা প্রধান সড়কের চরম বেহালদশা। শ্যামনগর হঠাৎপাড়া বাসস্টান্ড হতে সুমি ক্লিনিক পর্যন্ত সড়কটি যেন এখন মানুষের গলার কাটায় পরিনত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ৬/৭ বছর ধরে সড়কটি ভেঙ্গে আছে কিন্তু মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। সড়কের কিছু অংশ পাশ্ববর্তী মহেশপুর এবং বাকি অংশ চৌগাছা উপজেলার মধ্যে হওয়ায় সড়কের এই পরিনতি বলে অনেকে মনে করছেন।
গতকাল সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে, ভাঙ্গা স্থানে কাদা-পানি থৈথৈ করছে। বাড়তি সতর্কতা নিয়ে মানুষ চলাচল করছেন। এ সময় কথা পথচারী মামুন কবিরের সাথে। তিনি বলেন, আধুনিক সভ্যতায় এমন সড়ক কারও কাছে কাম্য নই। স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, জয় কুমার, বাবু বলেন, ভাঙ্গা সংলগ্ন আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একটু বৃষ্টি হলেই জমছে পানি আর সে সময়ে মানুষ আমাদের দোকানের মধ্য দিয়ে যাতায়াত শুরু করেন। খরা হলে ধুলাবালুতে একাকার হয়ে যায়, এই কষ্ট হতে আমরা পরিত্রান চাই। ভ্যান চালক আয়ুব হোসেন বলেন, উপজেলার বল্লভপুর গ্রামে বাড়ি। ভাড়া নিয়ে দিনে কয়েকবার এই বাজারে আসতে হয়। সড়কটি মেরামত করা জরুরী তা না হলে প্রায় দিনই নষ্ট হচ্ছে ভ্যান।
বাজারের মুদি ব্যবসায়ী প্রশান্ত কুমার, আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটি ভাঙ্গা থাকায় এর প্রভাব পড়ছে সর্বত্রই তাই দ্রত এটি পুনঃনির্মানের দাবি করেন তারা।
পুড়াপাড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রুজুন আলী ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, এই বাজার হতে সরকার প্রতি বছর কোটি টাকার উপরে রাজস্ব পাচ্ছে তারপরও কেন সড়কটি মেরামত হচ্ছে না তা বুঝে আসেনা। দুই উপজেলার মধ্যে বাজারের অবস্থান হওয়ার কারনে হয়ত এই পরিনতি। মহেশপুরের সাবেক এমপি শফিকুল আযম খান চঞ্চল ও চৌগাছার সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাক্তার নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থল দেখে গেছেন কিন্তু সড়ক যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থাই আছে। এখন দুই উপজেলাতেই নতুন এমপি হয়েছেন দেখা যাক কোন এমপি এই জনপদের মানুষের কষ্টের কথা উপলব্ধি করতে পারেন। ভাঙ্গা স্থানে প্রতি দিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে ভ্যান কিংবা পিকআপ যাচ্ছে উল্টে নষ্ট হচ্ছে সম্পদ। এমতাবস্থায় তারা দ্রæত সড়কটি মেরামতের জোর দাবি জানান।