আমিরুল ইসলাম,
আশাশুনি (সাতক্ষীরা), মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি | দৈনিক সংবাদ ৭১
সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলাকে একীভূত করে একটি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে স্মারকলিপিটি প্রেরণ করেন আশাশুনিবাসীর পক্ষ থেকে কয়েকজন সংক্ষুব্ধ নাগরিক।
স্মারকলিপিতে জানানো হয়, স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরায় দুটি পৃথক আসন ছিল—সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি) ও সাতক্ষীরা-৫ (শ্যামনগর)। এই দুই এলাকা ভৌগলিকভাবে দুর্গম, দুর্যোগপ্রবণ ও উপকূলীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় পৃথক আসন ছিল বাস্তবসম্মত ও প্রয়োজনীয়।
তবে স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, ২০০৮ সালের পর তৎকালীন রাজনৈতিক সরকারের সময় শুধু ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় এনে সাতক্ষীরার একটি আসন বাদ দিয়ে ঢাকাসহ অন্যান্য কিছু অঞ্চলে আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়, যা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর ধারাবাহিকতায় এবার আশাশুনি ও শ্যামনগরকে একীভূত করে একটি মাত্র সংসদীয় আসন—সাতক্ষীরা-৪—ঘোষণা করা হয়েছে, যা এলাকাবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আশাশুনি ও শ্যামনগর উভয় উপজেলাই নদীবহুল ও ভৌগলিকভাবে বিস্তৃত। আশাশুনি চারটি এবং শ্যামনগর তিনটি ভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত; পাশাপাশি তাদের মধ্যে সরাসরি কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই। প্রতিবছর বেতনা, মরিচ্চাপ, গলঘেষিয়া, কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভেড়ীবাঁধ ভেঙে আশাশুনির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। একই অবস্থা শ্যামনগরেও। এসব এলাকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন কার্যক্রম ও জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে একজন সংসদ সদস্যের পক্ষে কার্যকর তদারকি প্রায় অসম্ভব।
এ ছাড়া এত বড় ভৌগলিক এলাকা ও ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার একটি নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা, প্রচারণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করাও অত্যন্ত কঠিন।
তাই ভোটার সংখ্যা নয়, বরং ভৌগলিক অবস্থান, দুর্গমতা ও দুর্যোগপ্রবণতা বিবেচনায় আশাশুনি ও শ্যামনগরকে পৃথক দুটি সংসদীয় আসন হিসেবে পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা আশাশুনিকে পূর্বের ন্যায় একটি স্বতন্ত্র সংসদীয় আসন হিসেবে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা আমির আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষার, নায়েবে আমীর নুরুল আবছার মুরতাজা, সহকারী সেক্রেটারি ডা. রোকনুজ্জামান, অফিস সেক্রেটারি মাও. রুহুল কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান, মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ, শেখ আরিফুল্লাহ সিদ্দিকী, প্রদীপ কুমার প্রমুখ।