স্টাফ রিপোর্টার: প্রভাষক জাহিদ হাসান
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ও অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী—সবাই একত্রিত হয়ে এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদের একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে। সেখানে তিনি পবিপ্রবির উপাচার্য সম্পর্কে অশোভন মন্তব্য করেন, যা পরবর্তীতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। অধ্যাপক আজাদ পরে পোস্টটি মুছে দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও, পবিপ্রবি পরিবার এই ক্ষমা প্রত্যাখ্যান করে তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
বিক্ষোভ শেষে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন—
“একজন সম্মানিত উপাচার্যকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা মানে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকেই অপমান করা। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই।”
অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল কাফি বলেন,
“একজন শিক্ষক হয়ে অধ্যাপক আজাদ যেভাবে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা শুধু নৈতিকতা নয়, শিক্ষকতা পেশারও অবমাননা। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এক বিবৃতিতে জানায়,
“উপাচার্য ড. কাজী রফিকুল ইসলাম একজন সম্মানিত গবেষক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর নেতৃত্বে পবিপ্রবি দেশব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। এমন একজন শিক্ষাবিদের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য শিষ্টাচার, পেশাদারিত্ব এবং বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদার পরিপন্থী।”
জানা গেছে, ৩১ জুলাই “কম্বাইন্ড ডিগ্রি” বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার সময় উপাচার্য দাবিটি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, “এখন সময় এসেছে কম্বাইন্ড ডিগ্রির।”
এই বক্তব্য পবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেজে প্রকাশ হলে অধ্যাপক আজাদ সেখানে বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা থেকে পুরো ঘটনার সূত্রপাত।
এদিকে, অধ্যাপক আজাদের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে শুধু পবিপ্রবি নয়, বরং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও। তাঁরা এক যৌথ বিবৃতিতে মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে উপাচার্যের সম্মান রক্ষায় একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল (শনিবার) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করবে।
পবিপ্রবি পরিবার জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও পরিবেশ রক্ষায় এই ধরনের অনভিপ্রেত আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে এবং প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে দোষীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের।