স্টাফ রিপোর্টার: মো. আতিকুর রহমান | দৈনিক সংবাদ ৭১
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “জুলাই আন্দোলনের মূল নায়ক ছিলেন তারেক রহমান। আর সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাদের কারণেই আজ শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছেন।”
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার আয়োজনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পেশাজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আলোচনা সভার শুরুতে আওয়ামী দুঃশাসন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি) প্রদর্শন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, “১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির বহু নেতাকর্মী জীবনের সব কিছু হারিয়েছেন। অনেকের ব্যবসা, পরিবার, চাকরি—সব শেষ হয়ে গেছে। কেউ কেউ এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন, স্ত্রী স্বামীকে ত্যাগ করেছেন বছরের পর বছর ধরে ঘরে না ফেরায়। কিন্তু এসব ত্যাগ আলোচনায় আসছে না।”
আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আমরা এটি রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবে বলছি না। কোন খাতে কত চাকরি হবে, দেশ ও বিদেশে কত কর্মসংস্থান হবে, এর পূর্ণাঙ্গ হিসাব আমাদের কাছে প্রস্তুত। প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় পরিবর্তন আনবো।”
খসরু বলেন, “এখন দেশ গড়ার সময়। ৩১ দফার ভিত্তিতে আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে এগোতে চাই। তারেক রহমান এখন বলছেন, সহনশীলতা দরকার। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। সংস্কৃতি না বদলালে শত সংস্কারও ব্যর্থ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। আমি জেলে ছিলাম, সেখানে কমপক্ষে ১০ হাজার বন্দির মধ্যে ৯ হাজারই বিএনপির নেতাকর্মী ছিল।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “এই ৩৬ দিনের আন্দোলন কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি গত ১৬ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফসল। এই আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব হাসান আলী চৌধুরী এবং মহানগর ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইফতেখার ইসলাম লিটন।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পেশাজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক এবং ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী।