স্টাফ রিপোর্টার: হারুন অর রশিদ, দৈনিক সংবাদ ৭১
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপরাধীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন—দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত দলবদ্ধ সহিংসতা বা ‘মব’ সৃষ্টির পেছনে সরকারের কোনো গোপন ভূমিকা আছে কি না।
পুরান ঢাকায় সম্প্রতি সংঘটিত একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ভিডিও ফুটেজে আমরা যাঁকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত হতে স্পষ্টভাবে দেখেছি, তাঁকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি—এ প্রশ্ন সবার। কেন এই অন্যায়কারীদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে?”
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানাতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
তারেক রহমান আরও বলেন, “আমরা কি তাহলে ধরে নেব, যারা মব তৈরি করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের পেছনে সরকারের বা প্রশাসনের কোনো অংশের নীরব সমর্থন রয়েছে?” তিনি দাবি করেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা বারবার বলেছি—অন্যায়কারী যেই হোক, তাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। সরকারের দায়িত্ব জনগণের জানমাল রক্ষা করা।”
অপরাধীদের বিরুদ্ধে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, “যে অন্যায় করবে, তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো অন্যায়কারীকে দলের পরিচয়ে রক্ষা করা সমর্থনযোগ্য নয়।”
জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ‘চলমান ষড়যন্ত্র’ নিয়েও কথা বলেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, “স্বৈরাচার পতনের মাধ্যমে জনগণের বিজয় এলেও ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। অদৃশ্য শত্রু ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে। কারা পরিবেশকে অস্থির করতে চায়, তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।”
শহীদ পরিবারগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের স্বজনেরা আত্মত্যাগ করেছেন—তাদের ন্যায়বিচার কেন এখনও হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন জোর গলায় তুলুন। কারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বিচার বিলম্বিত করছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে খুলনায় যুবদলের এক কর্মী হত্যার ঘটনাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “তাঁর রগ কেটে দেওয়া হয়েছে, অথচ সেই বিচার নিয়েও কথা বলা হচ্ছে না। উল্টো দাবি করা হচ্ছে, বিএনপি লাশ নিয়ে রাজনীতি করছে। এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে, কারণ এর সঙ্গে বাংলাদেশের অস্তিত্ব জড়িত।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।