সহায়তা কেন্দ্রেই প্রাণ হারালেন ৩৪ জন | জাতিসংঘ বলছে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’
শামীম হাওলাদার,
দৈনিক সংবাদ ৭১ ডিজিটাল ডেস্ক
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত বিমান ও স্থল হামলায় একদিনেই নিহত হয়েছেন অন্তত ১১০ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে ৩৪ জন নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (Gaza Humanitarian Foundation – GHF) এর একটি সহায়তা কেন্দ্রের সামনে, খাদ্য সহায়তা নিতে আসার সময়।
এই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে শনিবার (১২ জুলাই) দক্ষিণ রাফাহ শহরের আল-শাকুশ এলাকায়। সহায়তা কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো একে ‘মানব হত্যাযন্ত্র’ ও ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
আল-আকসা হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দেগরান জানিয়েছেন, নিহতদের বেশিরভাগের মাথা ও পায়ে গুলি লেগেছে। তিনি বলেন, “চিকিৎসা সামগ্রীর ভয়াবহ সংকটে আহতদের বাঁচাতে আমাদের প্রাণপণ চেষ্টা করতে হচ্ছে, কিন্তু প্রতিদিন সেই সুযোগও সংকুচিত হয়ে আসছে।”
এছাড়া শনিবার গাজা শহরের তুফাহ এলাকার জাফফা স্ট্রিটে একটি আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় নিহত হন আরও ৪ জন, আহত ১০ জন। জাবালিয়ায় দুটি ভবনে হামলায় মারা যান ১৫ জন এবং শাতি শরণার্থী শিবিরে প্রাণ হারান আরও ৭ জন। উত্তর গাজার বেইত হানুন এলাকায় একযোগে প্রায় ৫০টি বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা গাজায় ২৫০ বার হামলা চালিয়েছে। একই সময়ে খাদ্য ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে, যদিও জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, অপুষ্টিজনিত কারণে এ পর্যন্ত অন্তত ৬৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আরও ৬ লাখ ৫০ হাজার শিশু চরম অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে। গত তিন দিনে খাবার ও ওষুধের অভাবে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে তারা।
এই পরিস্থিতিকে তারা ‘নিষ্ঠুর ও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা