প্রভাষক জাহিদ হাসান, দৈনিক সংবাদ ৭১ ডিজিটাল ডেক্স :
ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে জানিয়েছে, খাদ্য সংকটের কারণে গাজার মানুষ এখন চরম বিপদের মুখোমুখি। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন, আর শিশুরা মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএফপির ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কার্ল স্কাউ বলেন, “গাজায় এখন এমন এক মানবিক বিপর্যয় চলছে, যা ইতিহাসে নজিরবিহীন।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের টানা সামরিক অভিযানে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, এমনকি খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাও ধ্বংস হয়েছে। ফলে সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে।”
ডব্লিউএফপি’র তথ্য অনুযায়ী, গাজায় বর্তমানে প্রতি তিনজনের একজন মানুষ প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। প্রায় ৯০ হাজার শিশু তীব্র পুষ্টিহীনতায় ভুগছে, যাদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। এ অবস্থাকে ‘সম্পূর্ণ মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা বারবার গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানিয়ে আসলেও, ইসরায়েলের আরোপ করা নিরাপত্তা বিধিনিষেধের কারণে সহায়তা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। খাদ্য, ওষুধ এবং বিশুদ্ধ পানির সংকট প্রতিদিনই তীব্রতর হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ। লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, কেউ শরণার্থী শিবিরে, কেউ ধ্বংসস্তূপে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএফপি ও অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা