আজীজুল রহমান, মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, বাগেরহাট:
বাগেরহাটের মোংলায় সরকারি পুকুর নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারী ও শিশুসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের মাকড়ঢোন-নারকেলতলা এলাকার পদ্মা আবাসন প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—নুরনাহার (৩৭), সুনীতি রায় (৩৮), রেনু বেগম (৪০), আফরোজা বেগম (২৮), শিশু মিতু (২) ও সাদ্দাম (২৮)। বর্তমানে তারা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা আবাসনের একটি সরকারি পুকুর দীর্ঘদিন ধরে আবাসনের বাসিন্দারা সমবায় পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে আসছিলেন। তবে সম্প্রতি ওই পুকুরটি দখল করে মাছ চাষ শুরু করেন স্থানীয় প্রভাবশালী জনি (৩৫) ও এখলাছ (৪০)। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বাসিন্দাদের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।
আবাসনের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এক মাসেরও বেশি সময় আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আগের সেই বিরোধের জের ধরেই মঙ্গলবার জনি, এখলাছ, হৃদয় (২৮) ও রুমি (৩০) মিলে বাসিন্দাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
আবাসনবাসীদের ভাষ্য, “আমরা সমবায়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু জনি ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক পুকুর দখল করে নিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতে হয়।” তারা আরও জানান, এর আগে ওই পুকুর স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন তিন বছর ধরে জবরদখল করে মাছ চাষ করেছিলেন। বর্তমানে একই কায়দায় তা চালাচ্ছেন জনি ও এখলাছ।
অভিযুক্ত জনি বলেন, “আমি আর এখলাছ মিলে পুকুরে মাছ চাষ করছি। ওরা মাছ ধরছিল, তাই গ্যাঞ্জাম হয়েছে।”
এ বিষয়ে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, “ঘটনার পরপরই পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার সুমি জানান, “সরকারি সম্পত্তি নিয়ে এ ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আবাসনের বাসিন্দারা দাবি করেছেন, “৫০টি পরিবারের ব্যবহৃত এই সরকারি পুকুর যেন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দখলে না যায় এবং সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে—সে বিষয়ে প্রশাসনের দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।”