গাজায় ইসরায়েলের হামলায় একদিনে নিহত ১০৮
ঈদুল আজহার মধ্যেও থামেনি সহিংসতা, হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে
আন্তর্জাতিক ডেক্স :
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর টানা হামলা থামার কোনো লক্ষণ নেই। মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার সময়েও আগ্রাসন বন্ধ করেনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রোববার (৮ জুন) দিনভর ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর চালানো গোলাবর্ষণে গাজায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৩৯৩ জন।
এই তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে। তারা বলছে, চলমান যুদ্ধের ফলে মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪,৮৮০ জনে, এবং আহত হয়েছেন ১,২৬,২২৭ জন।
গাজায় চলমান সহিংসতার সূচনা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন গাজার নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে এক আকস্মিক হামলা চালায়। ওই হামলায় প্রায় ১,২০০ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজায়।
এর জবাবে ইসরায়েল শুরু করে ব্যাপক সামরিক অভিযান, যার লক্ষ্য ছিল হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস ও জিম্মিদের মুক্ত করা। এই যুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। ঘরবাড়ি ধ্বংস, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও বিশালসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও কয়েকটি আরব রাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল একটি সীমিত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। তবে সেই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়নি। মানবিক সহায়তা প্রদান বা আলোচনার কোনো স্থায়ী অগ্রগতি ছাড়াই সামরিক অভিযান ফের শুরু হয়।
গাজায় চলমান হামলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র এ সহিংসতা অবসানের আহ্বান জানিয়েছে। তারা যুদ্ধাপরাধ, নির্বিচার হামলা ও মানবিক আইন লঙ্ঘনের তদন্তের দাবিও তুলেছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবিলম্বে একটি দীর্ঘস্থায়ী অস্ত্রবিরতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকর কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়া এ মানবিক বিপর্যয় থামানোর কোনো উপায় নেই।