1. dailysonbad@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
  2. newsroom@dailysongbad71.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
নৃত্যের জ্যোতি ছড়াচ্ছে দিপুমনি: দিরাইয়ের সংস্কৃতিচর্চায় এক অনন্য আলো | দৈনিক সংবাদ ৭১
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

নৃত্যের জ্যোতি ছড়াচ্ছে দিপুমনি: দিরাইয়ের সংস্কৃতিচর্চায় এক অনন্য আলো

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ১১৭ বার দেখা হয়েছে

 

নৃত্যের জ্যোতি ছড়াচ্ছে দিপুমনি: দিরাইয়ের সংস্কৃতিচর্চায় এক অনন্য আলো

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই—a city of culture, literature, and music—now beams brighter with the rhythmic brilliance of এক তরুণী নৃত্যশিল্পী, দিপুমনি দাস। কালনী নদীর তীরে অবস্থিত এই ছোট্ট শহরে যখন দিন দিন মলিন হতে বসেছিল সাংস্কৃতিক চর্চা, তখনই নিজের মেধা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছেন ১৮ বছর বয়সী এই নৃত্যশিক্ষিকা।

দিপুমনি দাস বর্তমানে দিরাই সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। তার পৈতৃক বাড়ি জাহানপুর গ্রামে হলেও বেড়ে উঠেছেন পৌরসভার হারনপুরে। পিতা রতীশ চন্দ্র দাস একজন সরকারি কৃষি কর্মকর্তা। ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি ছিল দিপুমনির এক অদম্য আকর্ষণ। গ্রামীণ নানা অনুষ্ঠান, উৎসব বা স্কুলের মঞ্চ—সবখানেই নিজেকে মেলে ধরতেন নাচের মধ্য দিয়ে। সেই ভালোবাসাকে পেশায় রূপ দিয়েছেন তিনি, গড়ে তুলেছেন অনির্বাণ নৃত্যাঙ্গন একাডেমিতে একটি স্বপ্নের জগৎ।

গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের একাডেমি

অনির্বাণ সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি সংগীতশিল্পী নারায়ন দাসের উদ্যোগে এবং দিপুমনির নিবেদনেই গড়ে উঠেছে “অনির্বাণ নৃত্যাঙ্গন একাডেমি”, যার অবস্থান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আনোয়ারপুর গ্রামে। এখানে বর্তমানে ৩৫ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত নৃত্যচর্চা করে। প্রতি শুক্রবার হয় সাপ্তাহিক ক্লাস, আর বিশেষ অনুষ্ঠানের আগে নেয়া হয় বাড়তি প্রশিক্ষণ। প্রতিমাসে প্রতিটি শিক্ষার্থী মাত্র ৩০০ টাকা ফি দিয়ে এই চর্চায় অংশ নেয়। নাচ শেখার এই সুযোগ এখন দিরাইয়ের জন্য আশীর্বাদতুল্য।

শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছেন শিল্পের আলোকশিখা

দিপুমনির শিক্ষাদান শুধু নৃত্যের সীমায় আবদ্ধ নয়, বরং তিনি শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, সৌন্দর্যবোধ ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দিচ্ছেন। অভিভাবকরা বলছেন, তার মতো নিষ্ঠাবান ও ভালোবাসায় পূর্ণ নৃত্যশিক্ষক খুব কমই পাওয়া যায়। শিক্ষার্থী বিন্দা দেবনাথের মা মঞ্জুশ্রী দেবনাথ বলেন, “উনি খুব আন্তরিকভাবে বাচ্চাদের শেখান, এটা আমাদের জন্য আশার বিষয়।” আরেকজন অভিভাবক রিপা রায় বলেন, “আগে আমাদের সুনামগঞ্জ যেতে হতো। এখন দিরাইতেই আমরা সেই মানের প্রশিক্ষণ পাচ্ছি।”

সংগ্রাম থেকে সাফল্যের দিকে

দিপুমনি নিজের জীবনেও সংগ্রাম করেছেন। শৈশবে যখন গ্রামের লোকজনের উৎসাহে নাচতেন, তখন কেউ ভাবেননি এই মেয়েটি একদিন দিরাইয়ের সংস্কৃতির অন্যতম দ্যুতি হয়ে উঠবে। তিনি সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তুলিকা ঘোষ চৌধুরী ও শ্রাবন্তী সোমার কাছে। নৃত্যশিল্পে দক্ষতা অর্জনের পরই সিদ্ধান্ত নেন, এখন সময় এসেছে অন্যদের শেখানোর।

তিনি বলেন, “নৃত্যই আমার প্রাণ। আমি যতদিন বাঁচব, নৃত্য নিয়েই বাঁচতে চাই। আমি চাই আমার একাডেমির শিক্ষার্থীরা একদিন দেশের মঞ্চ কাঁপাবে।”

অনুপ্রেরণার বাতিঘর

জলি তালুকদার, বিটিভি তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী, দিপুমনির কাজের প্রশংসা করে বলেন, “আমাদের সময় দিরাইয়ে নৃত্য শেখার কোনো সুযোগ ছিল না। এখন অনেক একাডেমি গড়ে উঠছে। এটি অবশ্যই আনন্দের বিষয়।” একইসঙ্গে তিনি নৃত্যশিল্পীদের প্রতি একক নৃত্যের গুরুত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানান।

ভবিষ্যতের স্বপ্ন

নৃত্যশিল্পী দিপুমনি দাস কেবল একজন প্রশিক্ষক নন, তিনি একজন সাংস্কৃতিক দূত। তিনি গানের চর্চা, উপস্থাপনা, ও নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমেও যুক্ত। তার একটাই স্বপ্ন—দিরাইয়ের প্রতিটি শিশু যেন সংস্কৃতির ছোঁয়ায় বড় হয়, আর নৃত্যের মাধ্যমে নিজেদের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে পারে।

এই তরুণীর প্রচেষ্টা প্রমাণ করে, ইচ্ছা আর শ্রম থাকলে একজন মানুষ একার চেষ্টায়ও একটি শহরের সংস্কৃতিচর্চায় নতুন আলো জ্বালাতে পারেন। দিপুমনি দাস যেন হয়ে উঠেছেন দিরাইয়ের ‘নৃত্যের দীপ্তি’। এই দীপ্তি ছড়িয়ে পড়ুক দেশের সব প্রান্তে।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2024, All rights reserved. এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। এখানে নিজস্ব সংবাদ প্রচার সহ বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ সুত্র সহ প্রকাশ করা হয়। অনুগ্রহ পূর্বক কেহ অভিযোগ করিবেন না। তাছাড়াও কোন অভিযোগ থাকলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হইলো।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তাহোস্ট