বিএনপির তুলনায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির ১১ গুণ আয়
এম আলী আকবর, ব্যুরো চিফ
২০২৪ সালে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ আয় করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া অডিট প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওই বছরে জামায়াতের আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা, যা বিএনপির আয়ের প্রায় দ্বিগুণ এবং জাতীয় পার্টির আয়ের ১১ গুণেরও বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে জামায়াতের ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা। দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত হিসাব অনুযায়ী, বছরের শুরুতে দলের প্রারম্ভিক স্থিতি ছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১০১ টাকা।
জামায়াতের আয় এসেছে—
ব্যয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাতগুলো হলো—
কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাস ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা, আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা, প্রচারণা ও পরিবহন ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা, প্রার্থীদের অনুদান ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা, ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।
২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিলের পর এক যুগ পর ২০২৪ সালে আবার নিবন্ধন ফিরে পায় জামায়াত। ফিরেই তারা আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সব দলকে ছাড়িয়ে গেছে।
অন্যদিকে, বিএনপি ওই বছরে আয় দেখিয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা এবং ব্যয় করেছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। উদ্বৃত্ত ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা ব্যাংকে জমা রয়েছে। বিএনপির আয়ের উৎসের মধ্যে ছিল জাতীয় নির্বাহী কমিটির চাঁদা, বইপুস্তক বিক্রি, ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান ও ব্যাংক সুদ। ব্যয় হয়েছে আর্থিক অনুদান, ত্রাণ বিতরণ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, সভার হল ভাড়া, দাপ্তরিক ক্রোড়পত্র ছাপানো, ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন অফিস খাতে।
জাতীয় পার্টির আয় ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা এবং ব্যয় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা।
ইসির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় ৫০টি দলকে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে চিঠি পাঠানো হয়। এর মধ্যে ২৯টি দল নির্ধারিত সময়ে হিসাব দিয়েছে, ১০টি সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে এবং ১১টি দল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আইন অনুযায়ী, পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিলে দলের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে।