তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি আবুল কাশেমের তথ্য ও চিত্রে — মোঃ আতিকুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক সংবাদ ৭১
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় পরকীয়া প্রেমিককে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগে স্ত্রী ও স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যার দুই দিন পরও অভিযুক্ত নারী গ্রামের মসজিদে মিলাদ, তালিম ও খিচুড়ি বিতরণ করে স্বাভাবিক আচরণ করেন, যাতে কেউ হত্যার সন্দেহ না করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শাহবৃদ্ধি গ্রামের নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার সঙ্গে একই গ্রামের স্মৃতি আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে যৌবন বয়সে। তবে পারিবারিক আপত্তির কারণে স্মৃতির বিয়ে হয় মজিদপুর মধ্যপাড়ার সিএনজি চালক মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে। অপরদিকে নজরুলও অন্যত্র বিয়ে করেন। উভয়ের সংসারে দুটি করে সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পরও নজরুল ও স্মৃতির প্রেমের সম্পর্ক বজায় থাকে এবং তা পরকীয়ায় রূপ নেয়।
গত ৬ আগস্ট (বুধবার) রাতে স্মৃতি আক্তার ফোনে নজরুলকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন। বাড়ির দরজায় ওঁত পেতে ছিলেন স্বামী মোহাম্মদ হোসেন। নজরুল ঘরে প্রবেশ করতেই পিছন থেকে কুড়াল দিয়ে সজোরে আঘাত করেন হোসেন।
আহত নজরুল চিৎকার দিলে স্মৃতি তার মুখ চেপে ধরেন। এরপর হোসেন কুড়াল দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে হত্যা করেন।
পুলিশ জানায়, হত্যার পর দেহের দুই হাত, দুই পা ও মাথা আলাদা করে চারটি বাজারের ব্যাগে ভরা হয়। প্রতিটি ব্যাগে দুটি করে ইট ও পানির বোতল রেখে বাড়ির উত্তর পাশের তিতাস নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
হত্যার মাত্র দুই দিন পর স্মৃতি আক্তার গ্রামের মসজিদে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেন। এছাড়া ঘরে অর্ধশতাধিক নারী নিয়ে তালিম ও খিচুড়ি বিতরণ করেন, যাতে গ্রামবাসীর সন্দেহ এড়ানো যায়।
নজরুলের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার পরিবার থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে স্মৃতি আক্তার ও স্বামী মোহাম্মদ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিতাস থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় মামলার তদন্ত চলছে।