স্টাফ রিপোর্টার, প্রভাষক জাহিদ হাসান
প্রাথমিকের পর এবার মাদ্রাসার ইবতেদায়ি পর্যায় এবং অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্যও ফের চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা। অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ইবতেদায়ি পর্যায়ের বৃত্তি পরীক্ষা ছয়টি বিষয়ে পাঁচটি পত্রে অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়গুলো হলো— কোরআন মজিদ ও আকাইদ-ফিকহ, আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত- বিজ্ঞান (একত্রে)। প্রতিটি পত্রের মান ১০০ নম্বর। সর্বশেষ ২০০৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে এ ধরনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আগামী ২১, ২২, ২৩, ২৪ এবং ২৮ ডিসেম্বর এই পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা আয়োজনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও দাখিল মাদ্রাসার সঙ্গে সংযুক্ত ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর পঞ্চম শ্রেণির সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন,
“বৃত্তি পরীক্ষার বিস্তারিত পাঠ্যক্রম ও মানবণ্টন শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।”
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআইসংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তবে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে না।
প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ বিষয়ে চার পত্রে মোট ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে— বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে ১০০ নম্বর করে এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ও প্রাথমিক বিজ্ঞান মিলিয়ে ১০০ নম্বর। প্রতিটি পত্রের পরীক্ষা হবে আড়াই ঘণ্টার।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ‘অবহিতকরণ পত্র’ পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করে চালু করা হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পরীক্ষামূলকভাবে ফের বৃত্তি পরীক্ষা চালু করা হয়, যার ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৮২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়।
এছাড়া, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বাছাই করা নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থী এতে অংশ নিতে পারবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন,
“জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার বিষয়ে একাধিক সভা হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।”
২০১০ সালের আগে পৃথক জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও পরে তা একীভূত করে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) চালু করা হয়। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতিতে জেএসসি বন্ধ হয়ে যায় এবং নতুন শিক্ষাক্রমের কারণে আর পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।