দৈনিক সংবাদ ৭১ ডিজিটাল ডেস্ক
মো: শামীম হাওলাদার, মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার
অবরুদ্ধ গাজা সিটি দখলের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। শুক্রবার (৮ আগস্ট) এ অনুমোদনের পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ইসরায়েলের অভ্যন্তরে জিম্মিদের স্বজনরা বিক্ষোভ করে এর প্রতিবাদ জানান। ব্রিটিশ সরকার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানায় এবং অস্ট্রেলিয়া দখল পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বলে।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইসরায়েল স্থল অভিযান ও বিমান হামলা আরও জোরদার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা ব্যাপক প্রাণহানি ও বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে জার্মানি ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করেছে। হামাসের দাবি, এই পদক্ষেপ তাদের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলবে।
আগামী অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের দুই বছর পূর্ণ হবে। গত ২২ মাসের নির্বিচার হামলায় উপত্যকার ৬১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং দেড় লাখের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তবুও ইসরায়েল হামাসের কাছ থেকে কোনো জিম্মি মুক্ত করতে পারেনি। একই সময়ে খাদ্য ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় গাজায় অনাহার-অপুষ্টিতে মৃত্যুর সংখ্যা দুই শতাধিক ছাড়িয়েছে।
ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি মন্ত্রীরা গাজা পুরোপুরি দখলের জন্য চাপ দিচ্ছেন। তবে সেনাবাহিনী সতর্ক করে বলেছে, এতে অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। বর্তমানে গাজা সিটিতে প্রায় ৯ লাখ মানুষ বাস করছে, যেখানে ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষে প্রতিদিন মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
বিবিসি জানিয়েছে, যুদ্ধ শেষের জন্য ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা পাঁচটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে—
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সিদ্ধান্তকে ‘ভুল’ উল্লেখ করে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই পদক্ষেপ আরও বেশি রক্তপাত ছাড়া কিছুই বয়ে আনবে না। আমাদের দরকার যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, জিম্মিদের মুক্তি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধান।”
অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই পদক্ষেপ গাজার মানবিক বিপর্যয়কে আরও বাড়িয়ে তুলবে। স্থায়ী শান্তির একমাত্র পথ হলো দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, গাজায় পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ১২ হাজার শিশু ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে। অনাহারের কারণে মৃত্যুহারও বেড়ে চলেছে।