স্টাফ রিপোর্টার, প্রভাষক জাহিদ হাসান
দীর্ঘ ১০ বছর পর চাকরিতে পুনর্বহাল হলেও প্রাপ্য সম্মান ও পদোন্নতি না পাওয়ার অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ছাত্র বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. সাইফুল ইসলাম।
৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে তিনি এ সিদ্ধান্তের পেছনে নিজের অসন্তোষ ও বঞ্চনার বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেন।
পদত্যাগপত্রে ড. সাইফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ২০০৭ সালের ১ মার্চ তিনি প্রভাষক হিসেবে পবিপ্রবিতে যোগদান করেন। কিন্তু ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে চাকরি হারান। দীর্ঘ এক দশক পর ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট সহকারী অধ্যাপক পদে পুনরায় কর্মস্থলে ফিরলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে তিনি তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা ও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হন।
তিনি অভিযোগ করেন, একই সময়ে যোগদানকারী সহকর্মীরা বর্তমানে দ্বিতীয় গ্রেডের অধ্যাপকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে অধিষ্ঠিত হলেও, তাঁকে কোনো পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, একই সিন্ডিকেট সভায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক, যিনি রাজনৈতিক কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন, তাঁকে চাকরিতে ফেরার পরপরই দুই ধাপে পদোন্নতি দিয়ে অধ্যাপক করা হয়েছে। অথচ তাঁর (ড. সাইফুলের) ক্ষেত্রে তা দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন,
“ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টার মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও ইকোনমিকস অ্যান্ড সোশিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার ‘উপ-উপদেষ্টা’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাকেই এখন পরিচালক করা হয়েছে। অপরদিকে, ড. সাইফুল ইসলাম পূর্বে এসব প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন না। তাই তাঁকে ‘উপ-উপদেষ্টা’ হিসেবে রাখা হয়েছে। বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, বাস্তবে তা সেভাবে নয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ড. সাইফুল ইসলামের পদত্যাগের ঘটনাটি শিক্ষক সমাজে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘ সময়ের প্রতীক্ষার পর পুনর্বহাল হওয়া একজন শিক্ষকের প্রতি এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ন্যায়বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।