আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রভাষক জাহিদ হাসান
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় সামরিক অভিযান আরও জোরদার করে পুরো ভূখণ্ড দখলের পরিকল্পনা করছেন—তবে সেই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। ফলে গাজা যুদ্ধ নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে নেতানিয়াহুর ওপর।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) তিন ঘণ্টাব্যাপী এক উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান চিফ অব স্টাফ আয়াল জামির সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলেন, গাজার অবশিষ্ট অংশ দখলে নিলে ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে দীর্ঘদিন আটকে পড়তে পারে এবং জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইতোমধ্যে ৭৫ শতাংশ ভূখণ্ড তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালালে এই যুদ্ধের সূচনা হয়।
তবে যুদ্ধ চলাকালে গাজায় সামরিক শাসন জারি, দখলদারি নীতি এবং ইহুদি বসতি পুনঃস্থাপন সংক্রান্ত সরকারের কিছু সদস্যের অবস্থান নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একাধিকবার আপত্তি তোলা হয়েছে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও সম্প্রতি ইসরায়েলের এই সামরিক সম্প্রসারণ পরিকল্পনাকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দুই কোটির বেশি মানুষের এই ভূখণ্ডে দফায় দফায় বাস্তুচ্যুতি, খাদ্য সংকট এবং মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়ায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগও তীব্র হচ্ছে।
তিনজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, বৈঠকে সেনাপ্রধান আয়াল জামিরকে নেতানিয়াহু অভিযোগ করে বলেন, জিম্মি উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী ব্যর্থ হয়েছে। তিনি দাবি করেন, যত জিম্মি এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছে, তা সবই কূটনৈতিক উদ্যোগের ফল।
আগামী বৃহস্পতিবার গাজায় সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।
এদিকে, এক চতুর্থ ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, নেতানিয়াহু হামাসের ওপর চাপ বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে সামরিক অভিযান জোরদার করতে চান।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৪০ মিনিটের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “ইসরায়েলের জনগণ আর যুদ্ধ চায় না। গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত খারাপ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।