স্টাফ রিপোর্টার, প্রভাষক জাহিদ হাসান
৫ আগস্ট ২০২৫ | মঙ্গলবার | রাত ৮:২০ মিনিট
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ লক্ষ্যে তিনি শিগগিরই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাবেন বলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ঘোষণা দেন।
৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ভাষণে তিনি এ কথা জানান। এ ভাষণ ছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে। ভাষণ শুরু হয় রাত ৮টা ২০ মিনিটে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগেই, অর্থাৎ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করেন।”
তিনি আরও বলেন,
“ফেব্রুয়ারি খুব বেশি দূরে নয়। প্রস্তুতি নিতে নিতেই ভোট এসে যাবে। আমরা বহু বছর ভোট দিতে পারিনি। এবার সবাই ভোট দেবে — কেউ বাদ যাবে না।”
ভোটের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন,
“সবাই যেন বলতে পারে— আমি আমার ভোট দিয়েছিলাম, সেই ভোটেই দেশ নতুন পথে যাত্রা করেছিল।”
তিনি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন,
“আগামীকাল থেকেই আমরা মানসিক প্রস্তুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন শুরু করব, যাতে এবারের নির্বাচন দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে।”
নির্বাচন সামনে রেখে নাগরিকদের সরব ভূমিকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,
“আপনি যদি নিজের নির্বাচনী এলাকা থেকে দূরে থাকেন, তবে এখন থেকেই নিয়মিত সেখানে যান। ভোট দেয়ার আগমুহূর্তে যেন শহীদদের চেহারা চোখে ভেসে ওঠে, যাঁদের রক্তের বিনিময়ে এ অধিকার ফিরে পেয়েছি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“আমাদের তিনটি দায়িত্ব ছিল— সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন। এর মধ্যে অনেক সংস্কার ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। এতে অর্থনীতি, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা এসেছে।”
তিনি জানান,
“জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা-শ্রমিক সমাজ যেসব প্রত্যাশা প্রকাশ করেছিল, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র সেই প্রত্যয়ের প্রতিফলন। এগুলো বাস্তবায়নের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।”
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। এবার আমরা তাদের ভোটাধিকারের পূর্ণ নিশ্চয়তা দিতে চাই। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
শেষে অধ্যাপক ইউনূস বলেন,
“আজ থেকে আমরা আমাদের সর্বশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়— একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করছি।”