শ্রীবরদীতে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ, গর্ভে সন্তান—ধরা ছোঁয়ার বাইরে আসামি
শফিউল আলম, শ্রীবরদী প্রতিনিধি
দৈনিক সংবাদ ৭১
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বিলভরট গ্রামে এক তালাকপ্রাপ্ত নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের দুবু মিয়ার ছেলে মোঃ জহুরুল হকের (২৯) বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই নারী ৩১ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। আদালতে মামলা দায়েরের পরও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় হতাশ ও লজ্জিত ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগী নারী জানান, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে জহুরুল হক প্রথমে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর দীর্ঘদিন ধরে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য চাপ দিলে জহুরুল তাকে গালিগালাজ করেন এবং খুন-জখমের হুমকি দেন।
বিষয়টি আদালতে গেলে ভুক্তভোগী নারী শেরপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৯(১) ধারায় মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শ্রীবরদী থানাকে এফআইআর গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও এখনো পর্যন্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ভুক্তভোগীর বাবা মোঃ ধলু মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার মেয়ের জীবনটা শেষ হয়ে গেল। এখন পেটে সন্তান। আমরা গরিব মানুষ, কোর্টে মামলা করেছি, কিন্তু কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিকে ধরা হচ্ছে না। সমাজে মাথা তুলে চলতে পারি না। আমি শুধু চাই, যেন কেউ আমার নাতিকে জারজ না বলে।”
মেয়েটির ভাই মোঃ শাহজাহান বলেন, “জহুরুল হক প্রতারণা করেছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ায় সে আজও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই—অপরাধীর শাস্তি দিয়ে আমাদের সম্মান ফিরিয়ে দিন।”
স্থানীয় বাসিন্দা হায়বর আলী বলেন, “এই ঘটনা শুধু একটি মেয়ের সর্বনাশ নয়, পুরো সমাজের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এভাবে প্রতারণা করে কেউ যদি বাঁচতে পারে, তাহলে আর কোনো নারী নিরাপদ থাকবে না।”
অন্য এক প্রতিবেশী জানান, “জহুরুল শুরু থেকেই মেয়েটিকে ফাঁদে ফেলে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করেছে। এখন ন্যায়বিচার না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।”
ভুক্তভোগী নারী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই। আমার সন্তান যেন সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে।”
এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার জাহিদ বলেন, “আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।”