মো: গোলাম কিবরিয়া | রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহী নগরীতে মশার উপদ্রব চরম আকার ধারণ করেছে। দিনের আলোতেই মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী। অথচ, দীর্ঘদিন ধরে মশক নিধনের ওষুধ ছিটানো বন্ধ রেখেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)।
নগরীর ড্রেন ও নর্দমাগুলোয় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে থাকলেও তা নিয়মিত পরিস্কার করা হচ্ছে না। ঝোপঝাড়, অলি-গলির জলাবদ্ধ জায়গা এবং আবর্জনাপূর্ণ ড্রেনগুলোতে জন্ম নিচ্ছে লাখ লাখ মশা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বর্ণালী মোড় থেকে তেরোখাদিয়া পর্যন্ত বড় ড্রেনটি দীর্ঘ তিন মাস ধরে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ড্রেনের পাশে দাঁড়ালেই মশার ঝাঁক ঘিরে ধরে।
বর্ণালীর একটি লন্ড্রি দোকানের মালিক ভুট্টু রহমান বলেন, “দোকানে দিনের বেলাতেও মশার কারণে দাঁড়িয়ে থাকা দায়। সারাক্ষণ কয়েল দিতে হয়, অথচ শ্বাসকষ্টের কারণে কয়েলেও কষ্ট হয়।”
একই এলাকার মুদি দোকানদার অভিযোগ করেন, “বিকেলে ক্রেতারা দোকানে দাঁড়াতে পারেন না মশার দাপটে। বিক্রিও কমে গেছে।”
উপশহর এলাকার বাসিন্দা মোন্তাজুর রহমান বলেন, “প্রায় এক বছর হলো মশার ওষুধ ছিটানো দেখা যায় না। এ বছর শীতের পর থেকেই মশা বেড়েছে। ড্রেন, ঝোপঝাড়, ময়লার কারণে মশা দিন দিন বাড়ছে।”
নগরীর সাত্তার হোটেলের মালিক বলেন, “খাবার খেতে আসা ক্রেতারা শান্তিতে বসতে পারছে না। ব্যবসা মার খাচ্ছে রাতে। দিনের বেলা-রাতের বেলা সব সময় কয়েল দিতে হচ্ছে, তবুও মশার উপদ্রব কমছে না।”
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও মুখপাত্র ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস জানান, “মশার বিস্তারের কারণেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, বর্তমানে ভর্তি আছেন ২৬ জন। ডেঙ্গু এখন করোনার চেয়েও ভয়াবহ, অথচ সচেতনতা কম।”
রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলার বলেন, “মশা অনেক বেড়েছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে শৈথিল্য এসেছে। নাগরিকরাও বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড় পরিস্কার করছেন না।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আমরা মশার ওষুধ কিনছি না। ড্রেন ও ঝোপঝাড় পরিস্কার করেই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অক্টোবরের দিকে ৬০-৭০ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হবে। তখন মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো শুরু হবে।”