আমিরুল ইসলাম, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি।।
সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলাকে একীভূত করে গঠিত সংসদীয় আসন-১০৭ (সাতক্ষীরা-৪) বাতিলের দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মাওলানা এ এম রিয়াছাত আলী বিশ্বাসের পুত্র ও আশাশুনি উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর নু.আ.ম. মুরতাজা আলী এলাকাবাসীর পক্ষে এই আবেদনটি দাখিল করেন।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণাঞ্চলের দুটি উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগর দীর্ঘদিন ধরে পৃথক সংসদীয় আসন ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আশাশুনি ছিল সাতক্ষীরা-৩ এবং শ্যামনগর ছিল সাতক্ষীরা-৫ আসনের অন্তর্ভুক্ত। ওই সময় অঞ্চল দুটির ভৌগলিক দূরত্ব, দুর্গমতা এবং উপকূলীয় দুর্যোগপূর্ণ অবস্থার প্রেক্ষিতে পৃথক আসন রাখা হয়েছিল।
তিনি দাবি করেন, পরবর্তীতে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে তৎকালীন সরকার কিছু আসনে সংখ্যা কমিয়ে এবং কিছু এলাকায় বাড়িয়ে নতুনভাবে আসন বিন্যাস করে। তারই অংশ হিসেবে আশাশুনি ও শ্যামনগরকে একীভূত করে একটি মাত্র আসনে পরিণত করা হয়, যা বর্তমানে সাতক্ষীরা-৪ আসন হিসেবে চিহ্নিত।
নু.আ.ম. মুরতাজা আলী বলেন, “আশাশুনি ও শ্যামনগর—উভয় উপজেলাই বিস্তৃত, নদীঘেরা এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা। আশাশুনি চারটি এবং শ্যামনগর তিনটি খণ্ডে বিভক্ত। দুই উপজেলার মধ্যে সরাসরি কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। শ্যামনগর বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলা এবং আশাশুনিও জনসংখ্যা ও আয়তনে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবছর নদীভাঙন ও প্লাবনের কারণে এখানকার অবকাঠামো এবং জনজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই বিশাল ও বিচ্ছিন্ন অঞ্চলের ১০ লাখেরও বেশি জনগণের প্রতিনিধিত্ব একজন সংসদ সদস্যের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে করা অসম্ভব। ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম, নদী ভাঙন প্রতিরোধ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সীমাহীন জটিলতা দেখা দেয়।”
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভোটার সংখ্যা নয়, ভৌগলিক অবস্থান, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং উপকূলীয় সংকট বিবেচনায় এনে পুনরায় পৃথক আসন পুনর্বহালের দাবি জানান তিনি।
আবেদনে বলা হয়, গত ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রধান নির্বাচন কমিশন যে আসন পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তার তীব্র বিরোধিতা জানিয়ে তা বাতিল করে আশাশুনি উপজেলাকে পৃথক সংসদীয় আসন-১০৭ (সাতক্ষীরা-৩) হিসেবে পুনঃঘোষণার জোর দাবি জানানো হয়েছে।