আন্তর্জাতিক ডেক্স | প্রভাষক জাহিদ হাসান
গাজায় বন্দি থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ থামবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। শুক্রবার (১ আগস্ট) গাজার একটি সামরিক কমান্ড সেন্টারে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
সেনাবাহিনীর প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, গাজায় সামরিক ঘাঁটিতে কমান্ডারদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন জামির। এ সময় তিনি বলেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে—চুক্তির মাধ্যমে জিম্মি মুক্তি সম্ভব কিনা। যদি তা না হয়, যুদ্ধ বিরতিহীনভাবে চলবে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরায়েল থেকে মোট ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়। ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, এখনো ৪৯ জন গাজায় জিম্মি রয়েছেন এবং তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী দুটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে কয়েকজন জিম্মিকে শারীরিকভাবে অসুস্থ ও দুর্বল অবস্থায় দেখা গেছে।
জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যে শান্তি আলোচনা চলছিল, তা গত মাসে ভেস্তে যায়। এরপর থেকেই ইসরায়েলে অনেকেই আবারও সামরিক চাপ বৃদ্ধির পক্ষে মত দিচ্ছেন।
তবে ইসরায়েলি সেনাপ্রধান জামির জানান, আন্তর্জাতিকভাবে যুদ্ধবিরতির দাবির পরও হামাসের ‘নৈতিক ব্যর্থতা’ এই সংকটের মূল কারণ। তার ভাষায়, “ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি নৈতিক বাহিনী। আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ভিত্তিহীন ও প্রতারণামূলক।”
২০২৩ সালের হামাসের হামলায় ১,২১৯ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, গাজায় স্থল অভিযানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৮৯৮ জন সেনা নিহত হয়েছে।
অপরদিকে, হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬০,৩৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ এই সংখ্যাকে “বিশ্বাসযোগ্য” বলে উল্লেখ করেছে।