আজীজুল রহমান
মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, দৈনিক সংবাদ ৭১ ফকিরহাট, বাগেরহাট
ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উন্নয়ন তহবিল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদের ১% উন্নয়ন তহবিল রাস্তা, অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবেশ উন্নয়নসহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক খাতে ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ থাকে। তবে সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা নির্ধারিত থাকলেও তা ভেঙে ফেলে কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে অনিয়মের বিস্তৃত অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পের নামে তিন দফায় বিল উত্তোলন করা হয়েছে:
সব মিলিয়ে মোট ১১,১৬,০০০ টাকা একই প্রকল্পে ব্যয় দেখানো হয়েছে, যা পরিষদের ১% প্রকল্প বরাদ্দের বিধানকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন করে। এই বিল অনুমোদনের পেছনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি, প্রকৌশল বিভাগের অনুমোদন কিংবা কার্যসম্পাদনকারী ঠিকাদারের কোনও উপস্থিতি বা সঠিক নথিপত্র পাওয়া যায়নি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ পরিষদের ব্যাংক একাউন্ট থেকে বিগত সাত-আট মাসে বিপুল অঙ্কের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, যার কোনো হিসাব পরিষদের অধিকাংশ সদস্যের কাছেই নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, সমস্ত আর্থিক কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ ছিল শুধুমাত্র ইউপি চেয়ারম্যান শিরীনা আক্তার কিসলু এবং সাবেক ইউপি সচিব আশীষ ব্যানার্জি'র হাতে।
এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীনদের ঘর বরাদ্দে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত দরিদ্র ও অসহায়দের পরিবর্তে অর্থবান প্রভাবশালীরা ঘর পেয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়লেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান নিয়মিত পরিষদে অনুপস্থিত থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অপসারণ করা হয়েছে। অথচ ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও অনুপস্থিত ছিলেন—তবে তিনি আজও বহাল আছেন। এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়ায় এলাকাবাসী বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।
এলাকাবাসীর একটাই প্রশ্ন—"এই দুর্নীতির বিচার হবে তো?"
স্থানীয়দের মতে, তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এই অনিয়ম আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।