আজিজুর রহমান, মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার
পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম লোহালিয়া নদীর জোয়ার ও টানা ভারি বর্ষণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। নদীর প্রবল স্রোতের চাপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ওয়াপদা বেড়িবাঁধের অন্তত পাঁচটি স্থানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে হঠাৎ নদীর পানি ঢুকে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানির প্রবল চাপে বসতঘর, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে যাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। গ্রামীণ কাঁচা সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও টানা বর্ষণের ফলে লোহালিয়া ও পায়রা নদীতে পানি ও স্রোতের পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে উত্তর মুরাদিয়া, সন্তোষদি, চরগরবদি ও দক্ষিণ মুরাদিয়া গ্রামের অন্তত পাঁচটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ঘরে ঘরে ঢুকে পড়ে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
মুরাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান ফোরকান বলেন,
“উত্তর মুরাদিয়ার বশিরিয়া মাদ্রাসা-সংলগ্ন পাকা রাস্তার বড় একটি অংশ ভেঙে গেছে। এছাড়া সন্তোষদি গ্লুইসগেট, পাংসিঘাট এবং দক্ষিণ মুরাদিয়ার হাওলাদারবাড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে আশপাশের ঘরবাড়ি ও আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। আমরা পাউবো কর্মকর্তাদের দ্রুত অবহিত করেছি, কিন্তু পানি না নামা পর্যন্ত মেরামতের কাজ শুরু করা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও জানান, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আসন্ন আমন মৌসুমে কৃষি খাতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুজর মো. এজাজুল হক বলেন,
“বাঁধ ভেঙে পড়া এলাকাগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
পাউবো পটুয়াখালীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নিরব হোসেন জানিয়েছেন,
“ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি করে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।”
এদিকে, পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান,
“বাঁধ মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ চেয়ে ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হবে। অনুমোদন পাওয়া মাত্রই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, বাঁধ ভেঙে যেভাবে পানির প্রবল স্রোত গ্রামে ঢুকছে, তা ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিণতি দেখা দিতে পারে।