পটুয়াখালী ভার্সিটিতে, শেরে বাংলার ম্যুরালে নার্সারি বিজ্ঞাপন, জাতীয় নেতার মর্যাদাহানিতে ছাত্রদলের তীব্র প্রতিবাদ
শামীম হাওলাদার, মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার
দৈনিক সংবাদ ৭১
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের ম্যুরালে নার্সারির বিজ্ঞাপন লাগানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শহীদ জিয়াউর রহমান হল-১ অভিমুখে অবস্থিত ম্যুরালটির মূল পাথরে খোদাই করা প্রতিকৃতি হঠাৎ উধাও হয়ে যায়, যার পরপরই সেখানে একটি বাণিজ্যিক নার্সারির বিজ্ঞাপন দেখা যায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে ঘটনাটিকে জাতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও নেতৃত্বের প্রতি অবজ্ঞা ও প্রশাসনিক অবহেলার জ্বলন্ত প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি শুধু দৃষ্টিকটুই নয়, বরং জাতীয় চেতনাবোধের পরিপন্থী একটি কর্মকাণ্ড।
পবিপ্রবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা জনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, “একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কতটা কাণ্ডজ্ঞানহীন হলে এরকম একটা কাজ করতে পারে ভাবুন। শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক একজন জাতীয় নেতা, তাঁর ম্যুরালের গায়ে নার্সারির বিজ্ঞাপন লাগানো লজ্জাজনক ও দুঃখজনক।”
পবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদ রাতুল এ প্রতিবেদককে জানান, “শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এর ম্যুরালের ওপর বিজ্ঞাপন ব্যানার লাগানো নিকৃষ্ট ও জাতির অবমাননার শামিল। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং পাশাপাশি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের একটি ম্যুরাল স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে পবিপ্রবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্টকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে, উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষার্থীরা এবং সচেতন নাগরিক সমাজ সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি জনতা কলেজের একজন শিক্ষক বলেন, “জাতীয় ইতিহাস ও নেতৃবৃন্দের প্রতি সম্মান রক্ষা করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। দায়িত্বশীলদের উচিত হবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা দেওয়া।”
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ম্যুরালের অবমাননা করে কোনো অবস্থাতেই শেরে বাংলার মতো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা যায় না। তারা দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি শেরে বাংলার সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
ঘটনাটি এখন পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।