খন্দকার নিরব, স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক সংবাদ ৭১
ভোলা জেলার তজুমদ্দিনে নিখোঁজের চার দিন পর পরিত্যক্ত একটি পুকুর থেকে মো. কবির (৩৫) নামের বাকপ্রতিবন্ধী এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত মো. কবির শম্ভুপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিমুদ্দিন রাঢ়ি বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে। তিনি চার সন্তানের জনক ও একজন দিনমজুর ছিলেন। বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি শুধু ইশারায় কথা বলতেন।
নিহতের মা রোকেয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“আমার বোবা ছেলে কারও কাছ থেকে খাবার চেয়ে নিতে পারত না। তাকে কে বা কারা এত নির্মমভাবে হত্যা করল, তার বিচার চাই। চার নাতি-নাতনিকে নিয়ে কোথায় যাব?”
স্থানীয়রা জানান, নিহত কবির জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে সম্প্রতি তার চাচা ও চাচাতো ভাইদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন। ঘটনার একদিন আগে, ২৮ জুলাই বিকেলে চাচাতো ভাই মো. রাসেল (২৩), মো. রিয়াজ (৩০) এবং তাদের বন্ধু মো. আলাউদ্দিন (৩০) তাকে বাগানে ডেকে স্প্রিংগান (স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্র) দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখান। এরপর তিনি বাসায় এসে ভয়ে কাঁপতে থাকেন এবং পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান।
এ ছাড়া নিখোঁজের পরদিন কবিরের ঘরের সামনে একটি চিরকুট পাওয়া যায় যাতে লেখা ছিল— “কবিরকে হত্যা করা হয়েছে, এর পর তার ভাই মো. কামরুলকে হত্যা করা হবে।”
তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোহাব্বত খান বলেন,
“ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এ ঘটনার পেছনে জমি সংক্রান্ত বিরোধ না কি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, তা তদন্ত শেষে পরিষ্কার হবে। নিহতের পরিবারের দাবি, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।