মির্জাগঞ্জে চাঁদাবাজি ও মাদক মামলায় যুবদল নেতা রাসেল মৃধা যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার
মোঃ সাকির হাওলাদার
জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী
পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাকড়াবুনিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে যুবদল নেতা মোঃ রাসেল মৃধা (৪৫) কে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে মির্জাগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পের একটি বিশেষ দল ও মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
গ্রেফতারকৃত রাসেল মৃধা দক্ষিণ কাকড়াবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আঃ লতিফ মৃধার পুত্র। তিনি মির্জাগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলা নং-০৪, তারিখ: ১৬-০৬-২০২৫, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩৮৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬(২)/১০৯ দণ্ডবিধি অনুযায়ী এজাহারনামীয় প্রধান আসামি।
অভিযানকালে তার হেফাজত থেকে ০২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, মাদক বিক্রির নগদ ৬১,৪০৯ টাকা এবং একটি মোবাইল সেট উদ্ধার ও জব্দ করা হয়। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অতিরিক্ত অভিযোগ ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড
উল্লেখ্য, শুধু উক্ত মামলাই নয়, রাসেল মৃধার বিরুদ্ধে আরও একাধিক চাঁদাবাজি ও অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো নিম্নরূপ:
১. মির্জাগঞ্জ থানার মামলা নং-১২(০৪)২০২৫-এর ভুক্তভোগী গনি মুন্সির কাছ থেকে ধর্ষণের অভিযোগে আটক করে ৫০,০০০ টাকা চাঁদা আদায়।
২. কিসমতপুর এলাকার দুলালের মেয়ের প্রেমঘটিত সম্পর্কের জেরে তাকে জোরপূর্বক প্রেমিকের বাড়িতে তুলে দিয়ে দুলালের নিকট থেকে ২৫,০০০ টাকা চাঁদা আদায়।
৩. জনৈক কমলের কাছ থেকে ১০,০০০ টাকা চাঁদা আদায়।
৪. মকুমা এলাকার বাদলের মালিকানাধীন সম্পত্তি অন্যকে বুঝিয়ে দিয়ে ৩০,০০০ টাকা আত্মসাৎ।
৫. জনৈক আলমগীরকে চাঁদা না দেওয়ার কারণে মারধর।
৬. শিংবাড়ি মোড়ের দোকানগুলো থেকে নিয়মিত বাকিতে মাল ক্রয় ও খাবার খেয়ে টাকা পরিশোধ না করা এবং টাকা চাইলে দোকানদারদের লাঞ্ছিত করা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাসেল ও তার সহযোগীরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। নিরীহ গ্রামবাসীরা তার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না।
পূর্বের অপরাধের তথ্য
পুলিশের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, রাসেল মৃধার বিরুদ্ধে পূর্বে বাউফল থানায়ও মামলা রয়েছে। বাউফল থানার এফআইআর নং-৫, তারিখ- ০৯ মার্চ ২০১৩, ধারা-১৪৩/৩৪১/৩৮৫/৩০৭/৩২৩/৩৭৯/৪২৭ অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছিল।
মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এবং আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার যৌথভাবে জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।