এম আলী আকবর, ব্যুরো প্রধান
দৈনিক সংবাদ ৭১
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি আসন কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি। বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
কমিটির প্রাথমিক প্রস্তাবনায় বলা হয়, যেসব জেলায় ভোটার সংখ্যা কম, সেখানে আসন সংখ্যা কমানো হবে এবং যেসব জেলায় ভোটার সংখ্যা বেশি, সেখানে আসন বাড়ানো হবে। এই ধারায় বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সীমানা নতুন করে নির্ধারণের সম্ভাবনার কথাও উঠে আসে।
এই প্রস্তাব গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই বাগেরহাটের সাধারণ জনগণ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রস্তাবিত এই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলার আয়তন ৩,৯৫৯.১১ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ ১৩ হাজার। বিশাল ভৌগোলিক পরিসর ও জনসংখ্যার দিক বিবেচনায় জেলা এখনো চারটি আসনের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মোতালেব বলেন, “বাগেরহাট এমনিতেই অবহেলিত শহর। আসন কমে গেলে উন্নয়ন কার্যক্রম আরও বাধাগ্রস্ত হবে। নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি।”
বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য খান মনিরুল ইসলাম বলেন, “এখানে সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ ও মোংলা বন্দরের মতো আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। আয়তন ও গুরুত্বের দিক দিয়ে বাগেরহাটের আসন কমানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি একটি ফ্যাসিস্ট সিদ্ধান্ত।”
বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, “১৯৮৪ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন রয়েছে। নয়টি উপজেলার জন্য চারটি আসন ন্যায্য। বর্তমান খসড়া প্রস্তাব একটি অপমানজনক পদক্ষেপ। বরং আসন সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা উচিত।”
জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, “বাগেরহাটের একটি আসন কমানো নিছক ষড়যন্ত্র। সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজের মতো বিশ্ব ঐতিহ্য যেখানে রয়েছে, সেই অঞ্চলের সাংবিধানিক গুরুত্ব খর্ব করার চেষ্টা চলছে। সরকার যদি এই প্রস্তাব থেকে না সরে আসে, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।”
বর্তমানে বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন হলো:
বাগেরহাটবাসী এখন তাকিয়ে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে।