মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীর কাঁকনহাটে ন্যায্য দামে সার না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন এলাকার কৃষকেরা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কাঁকনহাট বাজার এলাকায় শতাধিক কৃষক বিক্ষোভ করেন এবং সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে পৌর শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে কৃষকদের সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে তাঁরা মিছিল করে কর্মসূচি শেষ করেন।
সমাবেশে অংশ নেওয়া কৃষকেরা অভিযোগ করেন, কাঁকনহাটের বিসিআইসি অনুমোদিত ডিলার ‘মেসার্স জি কে ট্রেডার্স’-এর মালিক তুহীনা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত টাকা ছাড়া সার বিক্রি করছেন না। সরকারের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী এক বস্তা ডিএপি সারের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা হলেও তিনি তা বিক্রি করছেন ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়। একইভাবে, ১ হাজার ৩৫০ টাকার টিএসপি সার বিক্রি করছেন দেড় হাজার টাকায় এবং ১ হাজার টাকার পটাশের দাম নিচ্ছেন ১ হাজার ২০০ টাকা।
কৃষকেরা অভিযোগ করেন, বাড়তি টাকা না দিলে ডিলার সার দেন না, বরং ভয়ভীতিও দেখান। কেউ প্রতিবাদ করলে নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়া হয়। এ কারণে কৃষকেরা মুখ খুলতে সাহস পান না। অনেক কৃষক জানান, তাঁরা যদি পাঁচ বস্তা সার চান, তখন ডিলার মাত্র ১০ কেজি সার দিয়ে ফেরত পাঠান অথবা সার না দিয়েই ফিরিয়ে দেন। এছাড়া ডিলার সার বিক্রির কোনো রসিদ দেন না, ফলে কৃষকেরা ন্যায্য হিসাবেও সুরক্ষা পান না।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কাঁকনহাটের কৃষক মেহেদী হাসান বলেন, “তুহীনা আক্তার বাড়তি টাকা ছাড়া সার দেন না। কোনো রসিদও দেন না। আবার সেই সার তানোর উপজেলায় বেশি দামে বিক্রি করছেন।”
এই অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন এবং এখন তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে ডিলারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা সমাবেশ থেকে ‘মেসার্স জি কে ট্রেডার্স’-এর লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানান এবং সার বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।