দিরাই উপজেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ ধামাইল উন্নয়ন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে চলছে চরম অস্থিরতা ও নাটকীয়তা। প্রবাসী সভাপতি এডভোকেট দেবদাস চৌধুরীকে ঘিরে পকেট কমিটির দৌরাত্ম্য এবং পাল্টা কমিটি গঠন ও বিবৃতিতে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে সংগঠনটির অভ্যন্তরে।
সংগঠনের একাংশের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসরত সভাপতি দেবদাস চৌধুরী এবং বিদেশে অবস্থানরত অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্তদের কারণে সংগঠনের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সেই প্রেক্ষিতে সংগঠনের সংস্কারের লক্ষ্যে গত ১১ জুলাই ২০২৫, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সোনালী ব্যাংকের দ্বিতীয় তলায় এক সাধারণ সভার মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সিলেট শিল্পকলা একাডেমির সংগীত শিক্ষক এবং বেতারের নিয়মিত শিল্পী বাবু অরুণ কান্তি তালুকদার। সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি বাবু নারায়ণ দাশ, সাবেক সিইও পিকলু সরকারসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ধামাইল সংগঠক ও শিল্পীরা। সভায় মোট ৬৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সভাপতি দেবদাস চৌধুরী আমেরিকায় বসবাসের কারণে সংগঠনের দায়িত্ব পালনে অপারগ এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় হওয়ায় তাকে পদচ্যুত করা হয়। একইসঙ্গে সাংগঠনিক সম্পাদক শিপলু রায়, সাধারণ সম্পাদক চিনু চক্রবর্তী ও কোষাধ্যক্ষ শুপ্রভা রাণী করকেও বহিষ্কার করা হয়।
পুনর্গঠিত কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন বাবু অরুণ কান্তি তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক বাবু শ্যামল দেব এবং অর্থ সম্পাদক হন অনুপম দাশ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় জানানো হয়, "ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সংগঠন নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব তথ্য থেকে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।"
সাবেক সিইও পিকলু সরকার জানান, “শিপলুর কর্মকাণ্ডে অনেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন। অথচ সভাপতি দেবদাস চৌধুরী এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে এক বছর নীরব থেকে শেষ পর্যন্ত প্রবাসে চলে যান। এতে করে সংগঠনের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে।”
পিকলু আরও জানান, “কমিটির সহ-সভাপতিদের মধ্যে অনেকেই সভাপতির আত্মীয়—স্বজন। কেউ সম্বন্ধিক, কেউ স্ত্রী, কেউ সম্বন্ধিকের বউ। এতে করে সংগঠনটি একটি পারিবারিক পরিমণ্ডলে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।”
অবশেষে সংস্কারপন্থীরা ধামাইল সংগঠকদের সরাসরি মতামতের ভিত্তিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করেন। আয়োজিত সভায় পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন সাবেক সিইও পিকলু সরকার।
ধামাইল সংগঠকদের প্রত্যাশা, নতুন কমিটির মাধ্যমে ধামাইল গান ও লোকজ সংস্কৃতি চর্চায় নতুন গতি আসবে এবং সংগঠনের সার্বিক গতিশীলতা ফিরবে।