এম আলী আকবর, ব্যুরো চিফ, দৈনিক সংবাদ ৭১
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহত চারজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। এদের কারো ক্ষেত্রেই সুরতহাল প্রতিবেদন বা ময়নাতদন্ত করা হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নিহতদের মধ্যে পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহাকে বুধবার রাতে গোপালগঞ্জ পৌর শ্মশানে সৎকার করা হয়। টাইলস মিস্ত্রির সহকারী রমজান কাজিকে এদিন এশার নামাজের পর তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। অপরদিকে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সোহেল রানা এবং দোকানের কর্মচারী ইমন তালুকদারকে বৃহস্পতিবার সকালে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্ক ও লঞ্চঘাট এলাকায় দিনভর এনসিপির সমাবেশ ঘিরে তীব্র সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে চারজন নিহত হন এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক আহত হন। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দফায় সংঘর্ষ হয়। শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
নিহত চারজন হলেন—কোটালীপাড়া উপজেলার হরিণাহাটি গ্রামের রমজান কাজি (১৯), শহরের শানাপাড়া এলাকার মোবাইল ব্যবসায়ী সোহেল রানা (৩৫), উদয়ন রোডের সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (৩০), এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন তালুকদার (২৪)। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, তারা সবাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রেও নিহতদের শরীরে গুলির চিহ্ন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জিবীতেষ বিশ্বাস জানান, সংঘর্ষে নিহত চারজনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে আনা হয়েছিল। গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সুমন বিশ্বাস নামে এক যুবক সেখানে ভর্তি হয়েছেন। তিনি পেশায় গাড়িচালক এবং সংঘর্ষে তার পেটে ও আঙুলে গুলি লাগে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘটনার বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।