প্রভাষক জাহিদ হাসান, দৈনিক সংবাদ ৭১ ডিজিটাল ডেস্ক :
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা সম্প্রতি আজারবাইজানে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও দামেস্ক সরকার এ ধরনের বৈঠকের কথা অস্বীকার করছে, তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্সির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র অন্তত একটি বৈঠকে আল-শারার সরাসরি উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রোববার (১৩ জুলাই) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সামা টিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈঠকে ইসরাইল-সিরিয়া সম্ভাব্য নিরাপত্তা চুক্তি, ইরানের প্রভাব, হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডার, লেবানন থেকে পরিচালিত ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর ভবিষ্যৎ এবং গাজা থেকে বিতাড়িত ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসআদ আল-শিবানী এবং ইসরাইলের সঙ্গে নিরাপত্তা সংলাপ পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত আহমেদ আল-দালাতি উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বিশেষ দূত এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক-গোয়েন্দা কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বৈঠকের স্থান ছিল আজারবাইজানের রাজধানী বাকু, যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সমন্বয়ে নির্ধারিত হয়েছে বলে জানানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই ভেন্যু নির্বাচন মূলত ইরানকে রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার কৌশলের অংশ। উল্লেখ্য, এর আগেও বাকু ইসরায়েল-তুরস্কসহ একাধিক আঞ্চলিক সমঝোতায় মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা পালন করেছে।
বৈঠকে দামাস্কাসে ইসরায়েলের একটি সমন্বয় অফিস খোলার বিষয়েও আলোচনা হয়। যদিও এটি আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক স্বীকৃতি নয়, তবুও এটিকে ইসরায়েল-সিরিয়া সম্পর্কে সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি আল-শারা আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সফরের সময়ই ইসরায়েলি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যদিও সিরিয়ার সরকারি সূত্র দাবি করছে, এসব আলোচনায় আল-শারা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন না।
কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আবুধাবিতে আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে পরে জানা যায়, সেই সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন, ফলে সংশ্লিষ্ট খবরে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের শেষ দিকে ইসরায়েল সিরিয়ার কিছু অংশে সামরিক উপস্থিতি গড়ে তোলে। আসাদের পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের সঙ্গে ইসরায়েলের এই গোপন সংলাপ মধ্যপ্রাচ্যের নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের বার্তা দিচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
তবে এখন পর্যন্ত সিরিয়া বা ইসরায়েলের কোনো পক্ষই এই গোপন বৈঠকগুলোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।