শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: মো. রায়হান | দৈনিক সংবাদ ৭১
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউজে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীসহ অবস্থানকালে হাতেনাতে ধরা পড়ার ঘটনায় ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় যশোর পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউজের কপোতাক্ষ কক্ষে উঠেছিলেন ওসি সাইফুল ইসলাম। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরেই জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রেস্ট হাউজে উপস্থিত হন।
রেস্ট হাউজের দরজায় ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ওসি সাইফুল বাইরে বের হয়ে এলে ছাত্রদল নেতারা তাকে টেনেহিঁচড়ে পুনরায় কক্ষে ফিরিয়ে নেন। এ সময় সেখানে বাগবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ওসি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে ক্লোজড করে।
রেস্ট হাউজের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি সাইফুল নিজে এসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে কক্ষ ভাড়া নেন।
এ বিষয়ে যশোর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিঠির ভিত্তিতে রেস্ট হাউজে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঘটনার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে।
অভিযুক্ত ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমি যশোরে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলাম। এক নারী বন্ধু আমার সঙ্গে ছিলেন। কোনো অনৈতিক কিছু ঘটেনি। এটি সম্পূর্ণ অপপ্রচার। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।”
ঘটনার পর থেকে মহেশপুরসহ পুরো জেলায় নানা আলোচনা ও গুঞ্জন চলছে। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইন্সপেক্টর তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “আমরা যশোরের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না। তবে ওসি সাইফুলকে ক্লোজড করা হয়েছে—এমন একটি চিঠি পেয়েছি।”
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইমরান জাকারিয়া বলেন, “ঘটনার পরপরই তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
