এম আলী আকবর, ব্যুরো প্রধান
দৈনিক সংবাদ ৭১ ডিজিটাল ডেক্স
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার রাজধানীর প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচি’ উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, “যে লক্ষ্য নিয়ে ছাত্র, জনতা, শ্রমিক, রিকশাচালকরা শহীদ হয়েছেন, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা এই মাসজুড়ে কর্মসূচি পালন করব। প্রতিবছর এই কর্মসূচি পালন করব, যাতে স্বৈরাচার আর কখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।”
গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, “এক বছর আগে, এই জুলাই মাসেই অভূতপূর্ব এক গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল, যা আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করে। এই আন্দোলনের মূল বার্তা ছিল—ফ্যাসিবাদের অবসান এবং একটি নতুন, জনগণের রাষ্ট্র গঠন।”
তিনি বলেন, “এই কর্মসূচি শুধু আবেগ বা প্রতিবাদের বিষয় নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে একটি বিরাট স্বপ্ন—নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের স্বপ্ন। যে লক্ষ্য নিয়ে ১৬ বছর পর গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তাৎক্ষণিকভাবে সেই লক্ষ্য অর্জিত হলেও বৃহত্তর লক্ষ্য এখনো বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।”
ড. ইউনূস দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেন, “স্বৈরাচারের চিহ্ন দেখা দিলেই যেন তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়, সেই প্রস্তুতি থাকা দরকার। আরেকটি অভ্যুত্থানের জন্য যেন আমাদের আবার ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য হলো—জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং অর্জিত সংস্কারের ভিত্তিকে শক্তিশালী করা।”
গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী মানুষদের—তরুণ-তরুণী, শিশু-বৃদ্ধ, শ্রমজীবী, শিক্ষক, রিকশাচালক, যারা রাস্তায় নেমে গণতন্ত্রের পতাকা উঁচিয়ে ধরেছিলেন।”
জুলাইকে “ঐক্যের মাস” হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “এই মাসে আমরা যে কর্মসূচির সূচনা করছি, তা শুধুই স্মরণ নয়; এটি একটি নতুন শপথ। আমরা চাই, গত বছরের মতো এবারও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ঐক্য দৃঢ় হোক।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। তারা বক্তব্যে গণতন্ত্র ও সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ড. ইউনূস শেষ বক্তৃতায় বলেন, “এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন আবারও নতুন করে জেগে উঠুক। আমাদের ঐক্য হোক সর্বমুখী ও অটুট। জুলাই-আগস্টের এই কর্মসূচি হোক স্বৈরাচারবিরোধী গণজাগরণের অনন্য দৃষ্টান্ত।”