হারুন অর রশিদ,
স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক সংবাদ ৭১ ডিজিটাল ডেক্স
গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির—কিছুই বাদ যাচ্ছে না তাদের আক্রমণের তালিকা থেকে। চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে মৃত্যু, আতঙ্ক আর কান্না। গাজাবাসী যেন হারিয়ে ফেলেছে বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকার—খাদ্য, পানি, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কিছুই নেই তাদের জীবনে। শিশুরা ক্ষুধা, আঘাত ও পোড়া শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছে, আর চিকিৎসকরা অসহায়।
সোমবার কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েল গাজা জুড়ে তীব্র বিমান হামলা শুরু করেছে। বিশেষ করে উত্তর গাজা শহরে আক্রমণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। আগেই ইসরায়েলি বাহিনী ওই এলাকার বাসিন্দাদের জোর করে সরে যেতে বাধ্য করেছে। সূত্র বলছে, এটি আরও বড় ধরনের স্থল অভিযানের ইঙ্গিত হতে পারে।
ভোর থেকে শুরু হওয়া বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছেন। দেইর আল-বালাহ শহরের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান। এছাড়া গাজার আল-আহলি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই তীব্র হামলার ফলে শত শত পরিবার আবারও গাজা শহর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, গাজার শুজাইয়া, তুফাহ এবং জাইতুন—এই তিনটি ঘনবসতিপূর্ণ পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, রাতের আকাশজুড়ে বিস্ফোরণের ঝলকানি, আতঙ্কিত মানুষের ছোটাছুটি এবং আগুনে জ্বলতে থাকা ভবন।
জাইতুন এলাকার একটি স্কুলেও হামলা হয়েছে, যেখানে বহু বাস্তুচ্যুত পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। সাত সন্তানের জননী আবেয়ার তালবা গণমাধ্যমকে বলেন,
“সবকিছু ফেলে চলে আসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় ছিল না।”
উল্লেখ্য, গত মার্চে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে পুনরায় গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক মহল আবারও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।