অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর তীব্র বিমান হামলায় সোমবার (২৩ জুন) আরও অন্তত ৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জনের বেশি ছিলেন সাধারণ ত্রাণপ্রার্থী, যারা বিতর্কিত একটি ত্রাণ সংস্থার সামনে খাবারের আশায় জড়ো হয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে টানা হামলায় শোক ও আতঙ্কে ডুবে আছে গাজাবাসী।
সোমবার ভোর থেকে গাজা সিটির আশপাশের এলাকা, দক্ষিণের রাফা ও নেটজারিম করিডোরে একাধিক বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী। আল-জাজিরার বরাতে জানা গেছে, এই হামলায় প্রাণ হারানোদের একটি বড় অংশই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর বিতরণ কেন্দ্রের সামনে জড়ো হওয়া সাধারণ মানুষ।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জিএইচএফ-এর ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে খাবারের আশায় জড়ো হওয়া মানুষের ওপর সরাসরি গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। এতে অন্তত ১৩ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অন্য নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরাও রয়েছেন, যাদের অনেকেই নিজ ঘরে বা অস্থায়ী তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন।
আল-জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানান, “ইসরাইল বর্তমানে ইরানের সঙ্গে সরাসরি সামরিক উত্তেজনার মধ্যেও গাজায় অভিযান থামাচ্ছে না। একদিকে আবাসিক এলাকায় বোমাবর্ষণ চলছে, অন্যদিকে ত্রাণ নিতে আসা ক্ষুধার্ত মানুষদেরও গুলি করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “২৭ মে থেকে জিএইচএফ এর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ শুরু হলে থেকেই ইসরাইল নিয়মিত এসব কেন্দ্রকে টার্গেট করছে।” তার মতে, এই সময়ে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১,০০০ জনের বেশি।
এদিকে জাতিসংঘ জিএইচএফ সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির অভিযোগ, ইসরাইল মানবিক সহায়তা প্রদানের আড়ালে এই বিতর্কিত সংস্থাকে ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা