ফকিরহাটে বিএনপি নেতাদের দাপটে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

কাবিখা প্রকল্পে চাঁদাবাজি, অনিয়ম ও সাংবাদিককে হত্যার হুমকির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট:

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাগলা দেয়াপাড়ায় বিএনপি ও তাতীদলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে কাবিখা প্রকল্পে অনিয়ম, চাঁদাবাজি এবং স্থানীয় সাংবাদিককে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় আতঙ্ক ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এলাকাবাসী।

অভিযোগের তীর ফকিরহাট সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আকরাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল সরদার এবং তাতীদল আহ্বায়ক মো. কামরুল ইসলামের দিকে। স্থানীয়দের দাবি, “খাদ্যের বিনিময়ে কাজ” (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও প্রকৃতপক্ষে শ্রমিক নিয়োগ না করে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হয় মাত্র ৭৫ হাজার টাকায়। ফলে প্রকল্পের অর্থের অপচয় হয়েছে, পাশাপাশি রাস্তা নির্মাণে ফসলি জমি কেটে কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী হারুন নামের এক কৃষক অভিযোগ করে বলেন,

“আমার বাড়ির সামনের জমি থেকে মাটি না নিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু উল্টো আমাকে ৮ হাজার টাকা চাঁদা দিতে বলা হয়। পরে বাধ্য হয়ে স্থানীয় এক মহিলা ইউপি সদস্যের হাতে ৪ হাজার টাকা দেই। অথচ এ কাজের জন্য আমি কোনো সম্মতি দিইনি।”

প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মো. হাফিজুর রহমান। তিনি জানান,

“আমি প্রকল্পের দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে অভিযুক্ত নেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয় এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখায়।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এলাকাবাসী প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। পাগলা দেয়াপাড়া এলাকার এক প্রবীণ ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“এইভাবে যদি ক্ষমতার অপব্যবহার চলতে থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আমরা সুবিচার চাই।”

স্থানীয়দের দাবি, কাবিখা প্রকল্পে দুর্নীতির পাশাপাশি সাংবাদিক ও জনগণকে হুমকি দিয়ে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।