আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেও গাজা উপত্যকায় হামলার মাত্রা আরও বৃদ্ধি করেছে ইসরায়েল। বিশেষ করে উত্তর গাজার বিভিন্ন শহরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্থল অভিযান ও গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাপকভাবে।
রোববার (১৬ জুন) অন্তত ৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় ইসরায়েলি গুলিতে প্রাণ হারান। নিহতদের বেশিরভাগই বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর সহায়তা কেন্দ্রের আশপাশে অবস্থান করছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি অভিযান কেবল হামাস নয়, বরং আবাসিক এলাকা ধ্বংস করে বেসামরিক মানুষদের গাজার পশ্চিমাংশে সরিয়ে দিতে চাইছে বলেই মনে হচ্ছে। দেইর আল-বালাহসহ আশপাশের এলাকায় দিনভর বিস্ফোরণ, ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের দৃশ্য পাওয়া গেছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, চলমান অভিযানে ইতোমধ্যে উপত্যকার প্রায় ৬০ শতাংশ ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে, কারণ অনেক পরিবার এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছে।
স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার পেছনে মূল লক্ষ্য ‘হামাস নিধন’ নয়, বরং গাজার সামগ্রিক সামাজিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দীর্ঘমেয়াদে বসবাসের অনুপযোগী করে তোলা।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহল গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনার দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হওয়ায় গাজা ইস্যু যেন আড়ালে চলে গেছে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে গাজা একটি সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত মানবিক বিপর্যয়ের প্রতীক হয়ে উঠবে।
সূত্র: আল জাজিরা