আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট সমাধানে জাতিসংঘের উদ্যোগে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আগামী ১৭ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ফ্রান্স ও সৌদি আরব সম্মেলনের সহ-সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও নিরাপত্তা ও লজিস্টিক চ্যালেঞ্জের কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাখোঁ। তিনি বলেন, “কিছু ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে না পারায় সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে। এটি যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় আয়োজন করা হবে।”
তবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ফ্রান্স তার অবস্থানে অটল থাকবে বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাখোঁ। তিনি বলেন, “আমরা একটি নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে, যা ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তাকে স্বীকার করবে। এই রাষ্ট্রে হামাসের কোনো স্থান থাকবে না।”
মধ্যপ্রাচ্যে সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা প্রসঙ্গে মাখোঁ জানান, ফ্রান্স এই অঞ্চলের অংশীদারদের সুরক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। তবে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক অভিযানে অংশ নেবে না।
এদিকে, ফ্রান্স ও সৌদি আরবের জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতেরা এক যৌথ চিঠিতে জানিয়েছেন, আঞ্চলিক উত্তেজনা ও নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে না পারায় সম্মেলনটি আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে অনেক আঞ্চলিক নেতা নিউইয়র্কে আসতে পারছেন না।
এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর সংখ্যা বাড়ানো। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ইতোমধ্যেই ১৪৫টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা গাজা ও পশ্চিম তীর নিয়ে গঠিত একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেন, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।
তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন এবং সম্মেলনে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সম্মেলন স্থগিত হলেও এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নিরসনে নতুন গতিপথ তৈরি করতে পারে।