আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানে ইসরায়েলের বিস্তৃত সামরিক হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গাজার ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। শনিবার (১৪ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এদিন গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিতব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনও স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গাজার ওপর চলমান গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের বিষয়ে যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল, তা অনেকটা হঠাৎই প্রশমিত হয়েছে।
ইসরায়েল এখন স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ইরান। গাজা বর্তমানে দ্বিতীয় স্তরের গুরুত্ব পাচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদক এমা গ্রাহাম-হ্যারিসন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতেও একই মনোভাব প্রতিফলিত হচ্ছে।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) সাবেক উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাভিয়ার আবু ঈদ বলেন,
“ইরানে ইসরায়েলের হামলা মানে এই নয় যে গাজার যুদ্ধ শেষ হয়েছে। আজও গাজায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। তবে পার্থক্য হলো, গাজা এখন অনেক কম আন্তর্জাতিক মনোযোগ পাবে।”
তিনি আরও বলেন,
“এই হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল আঞ্চলিক বার্তা দিচ্ছে যে, এই অঞ্চলের কোনো সমস্যারই রাজনৈতিক সমাধান নেই। তারা ইরানে হামলা চালিয়ে মার্কিন-ইরান আলোচনা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
শুক্রবার সকালে ইসরায়েল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা চালায়। লক্ষ্য ছিল পরমাণু অস্ত্র উন্নয়নে জড়িত বিজ্ঞানী, সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং নাতানজ ইউরেনিয়াম পরিশোধনাগার।
জবাবে, ইরানও ইসরায়েলের দিকে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী এই নতুন উত্তেজনার মধ্যে গাজার মানবিক বিপর্যয় যেন আরও উপেক্ষিত হয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছেন মানবাধিকারকর্মীরা।