বিশেষ প্রতিনিধি: আলাউদ্দিন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক ব্যতিক্রমী মানবিক উদ্যোগ নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক জনাব কাজী কামরুজ্জামান। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তার ঢাকার বাসায় কর্মরত গৃহকর্মী খাদিজা আক্তারের বিয়ের আয়োজন করে উদারতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
নিজের জন্মস্থান নবীনগর উপজেলার বলদীবাড়ি গ্রামে নিজ উদ্যোগে এই বিয়ের আয়োজন করেন কাজী কামরুজ্জামান। কনের বাড়ি সাজানো হয় রঙিন বাতিতে, পার্লার থেকে এনে সাজানো হয় কনেকে, এবং আয়োজনে ছিল শত শত মানুষের আপ্যায়নের ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার ছিল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান, আর শুক্রবার (১৩ জুন) অনুষ্ঠিত হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
বর দুলাল মিয়া (২৫), মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার দেলোয়ার হোসেনের পুত্র। কনে খাদিজা আক্তার (১৯) বলদীবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে।
কাজী কামরুজ্জামান শুধু বিয়ের আয়োজনই করেননি, বরের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রায় তিন লক্ষ টাকা মূল্যের উপহারসামগ্রী এবং আর্থিক সহায়তা, যেন নবদম্পতির সংসার শুরু হয় নিশ্চিন্তে। পুরো খরচ এসেছে তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে।
এই প্রসঙ্গে কাজী কামরুজ্জামান বলেন, “খাদিজা আমাদের পরিবারের একজন হয়ে উঠেছিল। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমি তাকে নিজের মেয়ের মতো করেই বিবাহ দিয়েছি। সমাজের বিত্তবানদের উচিত, যারা গৃহপরিচারিকা হিসেবে আমাদের ঘরে কাজ করে তাদের জীবন নিয়েও ভাবা।” তিনি আরও বলেন, “যদি প্রত্যেক গৃহকর্তা এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসে, তাহলে সমাজে ভেদাভেদ নয়, ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠিত হবে।”
এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বলদীবাড়ি গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টা মণ্ডলী। বিয়ের অনুষ্ঠানে এলাকার বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সুমন আহমেদ বাবু, সাঈদুর রহমান সাঈদ, মানিক সরকার, মহসীন সরকার, জালালউদ্দিন, আবু ইউসুফ, মোছেন মিয়াসহ অনেকে।
অনুষ্ঠান জুড়ে আবেগঘন পরিবেশে কেঁদেছেন কনে, গৃহকর্তা, অতিথিরাও। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন কাজী কামরুজ্জামান।