ইরাক-সিরিয়ার চেয়েও বেশি মার্কিন সেনা এখন লস অ্যাঞ্জেলেসে
বিক্ষোভ ঠেকাতে ‘টাস্ক ফোর্স ৫১’-এর অধীনে মোতায়েন ৪,৮০০ সেনা, খরচ ১৩৪ মিলিয়ন ডলার
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়া সহিংস বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে ইরাক ও সিরিয়ার চেয়েও বেশি মার্কিন সেনা।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এবং এবিসি নিউজ-এর খবরে জানা গেছে, বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে ৪,৮০০ ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা মোতায়েন রয়েছেন। অন্যদিকে ইরাকে মোতায়েন আছেন প্রায় ২,৫০০ এবং সিরিয়ায় ১,৫০০ মার্কিন সেনা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,
“মার্কিন শহরে সেনা মোতায়েনের সংখ্যা ইরাকের চেয়েও বেশি—এটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর জন্য ১৩৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে, অথচ এই অর্থ আমাদের শহরগুলোর উন্নয়নে ব্যয় করা যেত।”
‘টাস্ক ফোর্স ৫১’-এর কমান্ডার মেজর জেনারেল স্কট শারম্যান জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন সেনাদের কিছুক্ষেত্রে সাময়িক গ্রেপ্তার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের আগমনের আগ পর্যন্ত তাঁরা বিক্ষোভকারীদের আটক রাখতে পারেন।
গত ছয় দিন ধরে শহরজুড়ে চলমান বিক্ষোভে আরও কয়েক শত মেরিন সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শারম্যান আরও জানান, প্রায় ৫০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে এই অভিবাসনবিরোধী অভিযানের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সেনারা ফেডারেল অভিবাসন সংস্থা ‘আইসিই’-র কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় সহায়তা করছেন।
১৮৭৮ সালের পসি কমিটাটাস অ্যাক্ট অনুযায়ী, সামরিক বাহিনী বা ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সরাসরি আইন প্রয়োগে অংশ নিতে পারেন না।
তবে লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন সেনারা একটি ভিন্ন ফেডারেল আইন অনুসরণ করছেন, যাতে তাঁরা আইন প্রয়োগে না জড়িয়েও ফেডারেল কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন।
তবুও আইন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা রয়টার্সকে বলেন,
“যদি সেনারা আইসিই কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করেন, তাহলে সেটি অনেক সময় আইন প্রয়োগে রূপ নিতে পারে—যা পসি কমিটাটাস অ্যাক্ট-এর লঙ্ঘন হিসেবে ধরা হবে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযান ঘিরে ক্যালিফোর্নিয়ায় শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আরও অনেক শহরে।
আগামী শনিবার দেশজুড়ে ১০০-র বেশি স্থানে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।