রাজশাহীতে পশুর চামড়া পাচার রোধে সতর্ক অবস্থানে বিজিবি

রাজশাহী প্রতিনিধি: 

ঈদুল আজহার কোরবানির সময়কে কেন্দ্র করে রাজশাহী সীমান্তে পশুর চামড়া পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে যেন কোনোভাবেই কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার না হয়, তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে বিজিবি। চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়মিত টহলের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি এবং স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

রাজশাহী বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক গণমাধ্যমকে জানান, “ঈদের সময় পশুর চামড়া পাচারের আশঙ্কা বাড়ে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় এ ধরনের চেষ্টার ঝুঁকি বেশি থাকে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছি এবং মাঠে অতিরিক্ত টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “বিজিবির নিয়মিত টহল, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান, স্থানীয় জনগণের সহায়তা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।”

সীমান্তে পুশইন প্রতিরোধেও তৎপর বিজিবি

সীমান্তবর্তী এলাকায় শুধু চামড়া পাচার নয়, একই সঙ্গে বিজিবি পুশইনের (অবৈধভাবে লোক ঢুকিয়ে দেওয়া) বিষয়েও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল বলেন, “রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পুশইনের ঘটনা ঘটেনি। তবে দেশের অন্য কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমরা সেসব বিষয়ে বিএসএফের (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।”

দেশীয় খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ

ভারত থেকে গরু আমদানি ও পাচারের বিষয়ে সতর্কতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “দেশীয় খামারিরা যাতে লোকসানের মুখে না পড়েন, সে জন্য সীমান্তে গরু পাচার প্রতিরোধেও বিজিবি তৎপর রয়েছে। কোরবানির সময় অনেকে সীমান্ত পার করে অবৈধভাবে পশু আনার চেষ্টা করে। এতে করে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ সমস্যা রোধে বিজিবি আগে থেকেই কঠোর অবস্থান নিয়েছে।”

উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপনে সহায়তা

পশুর চামড়া পাচার ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ এলাকাতেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে বিজিবি। লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল বলেন, “জনগণ যেন নিরাপদ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে জন্য বিজিবির সদস্যরা শুধু সীমান্তে নয়, অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতেও তৎপর রয়েছে।”

সামগ্রিকভাবে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী এবং জনসাধারণের সম্মিলিত সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।