সিংগাতী বাজারে ‘দীপা রায় মিষ্টির ভান্ডার’-এ অতিমূল্যে পণ্য বিক্রি: ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, ৩ হাজার টাকা জরিমানা

আজীজুল রহমান
মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, বাগেরহাট

বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার সিংগাতী বাজারে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে অতিমূল্যে কোমল পানীয় বিক্রির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে স্থানীয় জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান “দীপা রায় মিষ্টির ভান্ডার”-কে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

[video width="848" height="478" mp4="https://dailysongbad71.com/wp-content/uploads/2025/06/VID-20250609-WA0008.mp4"][/video]

ভোক্তার অভিযোগেই প্রশাসনের অভিযান

জানা গেছে, দোকানটির মালিক চিত্তরঞ্জন রায় তার প্রতিষ্ঠানে কোকাকোলা কোম্পানির স্প্রাইট কোমল পানীয় ২ লিটার নির্ধারিত খুচরা মূল্য (MRP) ১১০ টাকা হলেও তা ১৫০ টাকায় বিক্রি করছিলেন। এই অনিয়ম নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন ভোক্তা অভিযোগ করেন স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।

ভোক্তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল তাৎক্ষণিক অভিযান চালায়। অভিযান পরিচালনা করেন ফকিরহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম শাহ-নেওয়াজ মেহেদী হাসান।

আইন অনুযায়ী জরিমানা, সতর্কবার্তা প্রশাসনের

অভিযানে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায়, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’-এর ৩৭ ও ৪০ ধারার আওতায় দোকান মালিককে ৩,০০০ (তিন হাজার) টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম পুনরাবৃত্তি হলে আরও কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ম্যাজিস্ট্রেট।

তিনি বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন,

“পণ্যের সঠিক মূল্য নিশ্চিত করা প্রতিটি ব্যবসায়ীর নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। কেউ যদি অতিমূল্য আদায় করে, তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।”

জনগণের পাশে প্রশাসন, প্রশংসা এলাকাবাসীর

ঈদের ছুটির মধ্যেও প্রশাসনের এমন তৎপরতা সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ও আস্থা তৈরি করেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও বাজারে উপস্থিত হয়ে সহকারী কমিশনারের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এক স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন,

“এই ধরনের অভিযান নিয়মিত হলে অনিয়ম কমবে, প্রতিযোগিতা হবে ন্যায্য এবং সাধারণ মানুষ ঠকবে না।”

সহকারী কমিশনার আরও বলেন,

“দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়তে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যে কোনো অনিয়ম বা ভোক্তা হয়রানির বিষয়ে তথ্য দিন, প্রশাসন সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।”

ভবিষ্যতের বার্তা: শৃঙ্খলা ও ন্যায্যতার পথে

এই অভিযান প্রমাণ করে প্রশাসন মাঠে সক্রিয় এবং জনস্বার্থ রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হন, বাজারে যেন ন্যায্য মূল্য বজায় থাকে—এ লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালালে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি সৎ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে।