আজীজুল রহমান
মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার, বাগেরহাট
বাগেরহাট জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়-এ ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার্থীদের সম্মানে সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৯ জুন) কলেজ ক্যাম্পাসের হলরুমে এক অনাড়ম্বর কিন্তু হৃদয়স্পর্শী আয়োজনে ৪৭০ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি শেখ ইফতেখার আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এস. এম. মাসুদুল হক এবং কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ আবু হেনা রফিকুজ্জামান। এ ছাড়াও কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি শেখ ইফতেখার আহমেদ তাঁর বক্তৃতায় বলেন—
“এইচএসসি জীবন ও ক্যারিয়ারের এক গুরত্বপূর্ণ মাইলফলক। তবে এটি কোনো শেষ নয়, বরং একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। আত্মবিশ্বাস, নিষ্ঠা এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোনো চ্যালেঞ্জ জয় করা সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন—
“শহীদ স্মৃতি কলেজ শুধু পাঠদানের কেন্দ্র নয়, এটি এক মূল্যবোধ চর্চার ক্ষেত্র। এখান থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীরা একদিন সমাজের নেতৃত্ব দেবে—এই বিশ্বাস আমাদের আছে।”
অধ্যক্ষ আবু হেনা রফিকুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন—
“আমাদের কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই প্রয়োজন একটি ৬ তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন। আমরা বিশ্বাস করি, যদি এ প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার অধিকার পাবে।”
তিনি কলেজ জাতীয়করণের দাবি তুলে ধরেন এবং স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশেষ অতিথি এস. এম. মাসুদুল হক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এক প্রাঞ্জল, অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যে বলেন—
“তোমাদের ভবিষ্যৎ তোমরাই গড়বে। শুধু সনদ অর্জন নয়, বরং নৈতিকতা, নেতৃত্ব এবং মানবিকতাও গড়ে তুলতে হবে। প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে টিকে থাকতে হলে ‘কোয়ালিটি ডেভেলপমেন্ট’ অপরিহার্য।”
তিনি আরও বলেন—
“তোমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়ো, যেখানে আর কেউ দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে না চায়। মেধাবীদের যেন দেশে থেকেই প্রাপ্য সম্মান ও সুযোগ পায়—সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানের শেষে কলেজের শিক্ষক ও অতিথিরা পরীক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। দোয়া পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের খতিব। দোয়া শেষে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়ে প্রস্থান করেন।
এই আয়োজনে শিক্ষার্থীরা যেমন সম্মানিত ও অনুপ্রাণিত হয়েছেন, তেমনি অভিভাবক ও শিক্ষকরা পেয়েছেন সন্তুষ্টি ও আত্মতৃপ্তি। অনেকেই মন্তব্য করেন, এই ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মাঝে পড়াশোনার আগ্রহ ও দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে তোলে।