সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ যদি তদন্তে সত্য প্রমাণিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধেও যথাযথ ও কার্যকর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (৯ জুন) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সরকার কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে হয়রানি করতে চায় না, আবার দোষী কেউ যাতে পার না পায় সেটাও নিশ্চিত করতে চায়। তাই এখন পর্যন্ত সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে তদন্ত চলমান রয়েছে, প্রমাণ মিললে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে সবার জন্য ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করা। আমরা চেষ্টা করছি, অপরাধ না করা কাউকে যেন কোনো ধরনের স্বস্তি বা সুবিধা দেওয়া না হয়। প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত পরিচালিত হচ্ছে।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত ৮ মে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে যান এবং এক মাস পর ৮ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসেন। তার বিদেশ গমনের খবরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এই সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, যতক্ষণ না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দলটির নেতাদের বিচার কার্য শেষ না হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আবদুল হামিদ দেশে থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়, যাতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং ওবায়দুল কাদের।
এই মামলার প্রেক্ষাপটে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার এবং তদন্ত কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়েও সরকারী তদন্ত চলছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ঈদুল আজহার সময় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “সরকারি সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করায় ঈদের সময় কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এটাই সরকারের প্রত্যাশা ছিল এবং তা সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।”
তিনি যাত্রাবাড়ী থানার অবকাঠামো, জনবল ও প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা নিয়েও মতবিনিময় করেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন।